মাটির নীচ দিয়ে বিদ্যুতের কেবল বসাতে গিয়ে দফারফা রাস্তার! তার জেরে ভোগান্তির মুখে কলকাতা পুরসভা এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এই অবস্থার জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। সরকারি সূত্রের খবর, রাস্তা মেরামতির জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে ৭ কোটি টাকা চেয়ে কলকাতা পুরসভা চিঠি দিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিবকে।
আবার বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের একাংশের পাল্টা দাবি, কলকাতা পুরসভা যে টাকা দাবি করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা কলকাতা পুরসভার কাছে তাঁদের পাওনা রয়েছে। কলকাতা পুরসভা বিদ্যুৎ নিলেও দীর্ঘদিন ধরে সেই বাবদ কোনও টাকাপয়সা দিচ্ছে না। এই দ্বন্দ্ব মেটাতে শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি দু’পক্ষকে নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
কিছু দিন আগেই নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে সরকারি কাজে যখন–তখন রাস্তা খোঁড়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, রাস্তা খোঁড়ার আগে পূর্ত দপ্তর বা স্থানীয় পুরসভার থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে সরকারি এজেন্সিগুলোকে।
যদিও পুরসভার অভিযোগ, তাদের না–জানিয়েই কলকাতার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে রাস্তা খুঁড়ে কেবল লাইন পাতছে ডব্লিউবিএসইডিসিএল (ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড)। ইতিমধ্যেই ১১১, ১১২, ১১৩, ১১৪ এবং ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তা খুঁড়ে বিদ্যুতের কেবল পাতা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ জায়গা আবার পড়ছে টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে, যেখান থেকে অরূপ বিশ্বাস বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। আবার ফিরহাদ হাকিম কেবল কলকাতার মেয়র নন, তিনি রাজ্যের পুরমন্ত্রীও।
এমনিতে নিয়ম অনুযায়ী, কলকাতা শহরে রাস্তা অথবা ফুটপাথ খুঁড়তে হলে পুরসভার থেকে আগাম অনুমতি নিতে হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর সেই রাস্তা বা ফুটপাথ মেরামতির জন্য যে টাকা খরচ হবে, সেটা মেটাতে হয় ওই এজেন্সিকেই— যারা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করেছে। অভিযোগ, এ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানেনি বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। কলকাতা পুরসভার কর্তাদের দাবি, রাস্তা খোঁড়ার জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে ‘ডিমান্ড নোটিস’ পাঠানো হলেও তারা টাকা মেটানোর নাম করছে না। তারা যে রাস্তা কাটবে, সেই খবরটা পর্যন্ত পুরসভাকে আগেভাগে জানানো হয়নি। কলকাতার ১১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার, তৃণমূলের গোপাল রায়ের বক্তব্য, ‘মাস দুয়েক আগেই ওয়ার্ডে কয়েকটা নতুন রাস্তা বানানো হয়েছিল। বিদ্যুতের কেবল বসাতে গিয়ে ওই রাস্তাগুলোর দফারফা হয়ে গিয়েছে।’