এই সময়, কালনা: চুরির অভিযোগে ধৃত ব্যক্তি শৌচালয় থেকে বেরচ্ছে না দেখে অস্থির হয়ে ওঠেন বাইরে অপেক্ষায় থাকা পুলিশকর্মী। ধৈর্যচ্যুতি ঘটায় তিনি ধাক্কা দিয়ে শৌচাগারের দরজা খুলে দেখেন, ভিতর ফাঁকা। কেউ নেই! এতক্ষণে ওই পুলিশকর্মী লক্ষ করেন, শৌচাগারে রয়েছে এগজ়স্টের ফাঁকা চৌকো অংশ। সেই ঘুলঘুলি দিয়েই চম্পট দিয়েছেন চুরির অভিযোগে ধৃত ব্যক্তি।
কালনার তালবোনা গ্রামের বাসিন্দা সুজয় মল্লিককে বাইক চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সোমবার তাঁকে কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয়। অসুস্থতা বোধ করায় চিকিৎসার জন্য সুজয়কে নিয়ে যাওয়া হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে পুলিশ সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন সুজয়। কালনা মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা নাগাদ পেটব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসা ওই বন্দি সুপার স্পেশালিটি ভবনের মেল সার্জিকাল ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন।
পরে চিকিৎসক পরীক্ষা করে বোঝেন, এটা সার্জিকালের বিষয় নয়। তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় পুরোনো বিল্ডিংয়ের মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে। সেখানে ফেসিলিটি ম্যানেজারের ঘরের উল্টো দিকে পুলিশ সেলে ছিলেন ওই বন্দি। এ দিন দুপুরে হাসপাতাল থেকে তাঁকে খাবারও দেওয়া হয় জানিয়ে সহকারী সুপার বলেন, ‘ওই বন্দি পুলিশকর্মীদের শৌচালয়ে যাওয়ার কথা বলেন। একইসঙ্গে জানান, তিনি কমোডে অভ্যস্ত নন, তাঁর ইন্ডিয়ান স্টাইল চাই। পুলিশ তাঁকে পে অ্যান্ড ইউজ় টয়লেটে নিয়ে যায়।’
সেখানে এক পুলিশকর্মী পাহারায় ছিলেন জানিয়ে সহকারী সুপার বলেন, ‘অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেলেও সাড়াশব্দ না পেয়ে ওই পুলিশকর্মী দরজার ছিটকিনি খুলে দেখেন, শৌচালয়ের ভিতরে কেউ নেই। এখন শৌচালয়ের ঘুলঘুলি দিয়ে ওই বন্দি পালিয়েছেন কি না সেটা পুলিশ খতিয়ে দেখবে।’
পুলিশ জানিয়েছে, সুজয়ের খোঁজে তল্লাশি চালানো হলেও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি। হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হাসপাতাল লাগোয়া রেললাইন ধরে ধৃত পালিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ কালনা মহকুমা আদালতের এজলাসের সামনে থেকে পুলিশি নজর এড়িয়ে পালিয়ে যায় বাসুদেব মণ্ডল নামে এক আসামি। তার এখনও খোঁজ পায়নি পুলিশ।
ফের এক বন্দি পালিয়ে যাওয়ায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কালনার এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী বলেন, ‘পলাতক ওই বন্দির খোঁজে তল্লাশি চলছে। বাইক চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পরে সোমবার আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকেই পালিয়ে গিয়েছে।’