• লজঝড়ে দেহ নিয়ে অপরাধী ধরতে দৌড় বুড়ো ভ্যানের
    এই সময় | ২২ জানুয়ারি ২০২৫
  • রাহুল মজুমদার ■ শিলিগুড়ি

    কোনটির বনেটে জং ধরে ঝনঝন শব্দ হচ্ছে তো কোনটির আবার চাকা পুরোপুরি ফ্ল্যাট। চাকায় গ্রিপ বকে কিছু নেই। কোনটি আবার পুলিশের উদ্ধার করা চোরাই গাড়ি। সামনে পুলিশ লেখা স্টিকার চিপকেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহর জুড়ে। কিন্তু এই গাড়িগুলির কোনটিরই ফিটনেস বলে কিছু নেই। না আছে ইন্সিওরেন্স না আছে পলিউশন পরীক্ষার কাগজ।

    শহরের সিই, ডিসিপি এসিপি পদমর্যাদার পুলিশ কর্তাদের গাড়ি বাদে বাকি গাড়িগুলিরই একই পরিস্থিতি। দুই একটি থানার আইসিদের গাড়ির কাগজ পত্র ঠিক রয়েছে। বাকি গোটা কমিশনারেটে এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে লড়ঝড়ে বুড়ো টহলদারি ভ্যানই শিলিগুড়ি পুলিশের একমাত্র ভরসা।

    তবে এই নিয়ে পুলিশের অন্দরেও আলোচনা রয়েছে। এই গাড়িগুলি নিয়ে দুস্কৃতিদের অত্যাধুনিক গাড়িকে টক্কর দিতে গিয়ে যে শিলিগুড়ির পুলিশের মুখ পোড়ে তা তাদের অন্দরের কথাতেই স্পষ্ট। যদিও শিলিগুড়ি পুলিশের কর্তারা এই যুক্তি মানতে নারাজ। শিলিগুড়ি ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাকেশ সিংয়ের বক্তব্য, ‘এই বিষয়টি ডিসিপি সদর ভালো বলতে পারবেন। তবে আমরা গাড়িগুলির নিয়মিত মেরামত করি।’ ডিসিপি সদর তন্ময় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য মেলেনি।

    শিলিগুড়ির বিভিন্ন থানায় যে গাড়িগুলি ব্যবহার করা হয় সেগুলির বেশিরভাগই চোরাই কিংবা অপরাধে ব্যবহার করা গাড়ি। বিভিন্ন থানার পুলিশ এই গাড়িগুলি ধরে বাজেয়াপ্ত করে। এরপর সেগুলি অপরাধ দমনের কাছে ব্যবহার করে। বিভিন্ন থানা যে কয়েকটি হাতে গোনা টহলদারি ভ্যান রয়েছে সেগুলির পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এই ভ্যানগুলি কোনটি নদীয়ার তো কোনটি মুর্শিদাবাদ থেকে আনা হয়েছিল। ১২ বছর আগে অন্তত ২৫ বছরের পুরোনো এই ভ্যানগুলি আনা হয়েছিল। সেই থেকে শহরব্র রাস্তায় দৌড়ে বেড়াচ্ছে এই গাড়িগুলি। এই মুহুর্তে শিলিগুড়ি থানা এলাকায় ছয়টি ভ্যান রয়েছে।

    পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়িতে একটি এবং খালপাড়া ফাঁড়িতে একটি করে ভ্যান রয়েছে। এই দুই ফাঁড়ির ওসিদেরও নিজস্ব কোন গাড়ি নেই। এরাও বাজেয়াপ্ত করা গাড়িতেই ঘুরে বেড়ায়৷ নিউ জলপাইগুড়ি থানার কাছে পাঁচটি নিজস্ব ভ্যান রয়েছে। এই ভ্যান খারাপ হলে কখনো ধাক্কা দিয়ে তো কখনো অন্য গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে মেরামত করে গাড়ি স্টার্ট করা হয়। মাটিগাড়া থানায় টহলদারি গাড়ির সংখ্যা চারটি। অন্যদিকে বাগডোগরায় তিনটে, ভোরের আলোতে দুটি এবং ভক্তিনগর এলাকায় চারটি গাড়ি রয়েছে। সব গাড়িগুলিরই একই পরিস্থিতি। কিন্তু কেন গাড়িগুলির মেরামত করা হচ্ছে না, কেনই বা নতুন গাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

  • Link to this news (এই সময়)