• হাজার বছরের পুরনো বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার, চাঞ্চল্য ব্যান্ডেলে 
    আজকাল | ২২ জানুয়ারি ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি:‌ খনন করে জড়ো করে রাখা মাটি থেকে উদ্ধার প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি। বহুমূল্য বেলে পাথরের দাঁড়িয়ে থাকা বিষ্ণুমূর্তিটি আনুমানিক এক হাজার বছরের পুরনো বলে ধারণা পুরাতত্ত্ব বিভাগের। মূর্তি উদ্ধার হয়েছে গত শুক্রবার ব্যান্ডেল বিক্রমনগর হরনাথ নীরদা সুদন্দী ঘোষ উচ্চ বিদ্যালয়ে খনন কার্য চলার সময়। ওই দিন স্কুলের ভিতর সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরির উদ্দেশে মাটি খননের কাজ চলছিল। মাটি খুঁড়ে স্কুলের মাঠের একদিকে সেই মাটি জড়ো করে রাখা হচ্ছিল। ওই স্কুলের নবম শ্রেণির দুই ছাত্রী জ্যোতি মণ্ডল ও মোহিনী সরকার খেলার সময় মূর্তি দেখতে পায়। সেই মূর্তি সেখান থেকে নিয়ে দুই ছাত্রী যায় টিচার্স রুমে। সেখানে স্কুলের ভূগোলের শিক্ষিকা সংঘমিত্রা পালিত এবং ইংরেজি শিক্ষিকা করুনা চ্যাটার্জিকে মূর্তি দেখায়। মূর্তি দেখেই শিক্ষিকারা প্রাচীন ওই মূর্তির অপরিসীম ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুভব করেন। বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানানো হয়। এই প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক সৈকত দাস জানিয়েছেন, খুবই আনন্দের বিষয়। একটা প্রাচীন ইতিহাসের নিদর্শন তাঁদের স্কুল থেকে উদ্ধার হয়েছে। স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক বিশ্বরূপ দে পুরাতত্ত্ব নিয়ে চর্চা করেন। তাঁকে জানানোর পর তিনি ইন্টারনেট ঘেঁটে গুগুলে গুপ্ত যুগের সঙ্গে ওই মূর্তির সাদৃশ্য খুঁজে পান। তাঁর কথা অনুযায়ী, স্কুলের তরফে বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় পূরাতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মূর্তির ছবি পাঠানো হয়। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকরা ছবি দেখে জানান, মূর্তির ঐতিহাসিক মূল্য অনেক। খুব গোপনীয়তার সঙ্গে মূর্তিটিকে রক্ষা করতে হবে। তার পরে স্কুল কতৃপক্ষের তরফে ওই মূর্তি স্কুল বাড়িতে রাখার ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। যেহেতু অতীতে দু’‌বার স্কুলে চুরির ঘটনা ঘটেছে। তাই মূর্তি সেখান থেকে নিয়ে সেফ ভল্টে রাখার ব্যাবস্থা করা হয়। বুধবার আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কলকাতা দপ্তর থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেনডেন্ট আর্কিওলজি (কলকাতা সার্কেল) ডঃ সঞ্জয় পন্ডা ও প্রদীপ কর হরনাথ নীরদা সুদন্দী ঘোষ উচ্চ বিদ্যালয়ে আসেন। দীর্ঘ সময় ধরে মূর্তি খতিয়ে দেখেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মূর্তি পরীক্ষা করেন। যে জায়গা থেকে মূর্তি উদ্ধার হয়েছে সেই জায়গাও ঘুরে পরীক্ষা করেন। সব শেষে তাঁরা জানিয়েছেন, দাঁড়িয়ে থাকা বিষ্ণুমূর্তি আনুমানিক এক হাজার বছর আগের হতে পারে। 

    প্রসঙ্গত, এক সময় গঙ্গার গতিপথ এই এলাকা দিয়েই ছিল। এরকম অনেক মূর্তি ২৪ পরগনা জেলায় পাওয়া গেছে। এই মূর্তি নিয়ে গিয়ে মিলিয়ে দেখা হবে। গবেষণা করা হবে। তারপর মূর্তির সঠিক সময়কাল জানা যাবে। এদিকে স্কুলের ভিতর থেকে এই ধরনের একটি ঐতিহাসিক নির্দশন উদ্ধারে উচ্ছ্বসিত পড়ুয়া এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ।

    ছবি:‌ পার্থ রাহা 

     
  • Link to this news (আজকাল)