সুজয় মুখোপাধ্যায়
দিনমজুরের পরিবার, টেনেটুনে চলে সংসার। ১৭ জানুয়ারির বিকাল থেকে হুগলির বৈঁচিগ্রামের সেই পরিবারে খুশির হাওয়া। ক্ষণে ক্ষণে ঘরে আসছে লোকজন। পাড়ায় চলেছে দেদার মিষ্টিমুখ। কারণ ওই দিন বিকালেই একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই পরিবারের বধূ স্বপ্না ক্ষেত্রপাল। আর তাতেই খুশির আমেজ পাড়াজুড়ে।
হুগলির বৈঁচিগ্রাম পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা স্বপ্না ক্ষেত্রপালকে ১৭ জানুয়ারি পূর্ব বর্ধমানের কালনার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই বিকালে তিন পুত্র সন্তানের জন্ম দেন স্বপ্না। সেখানে কয়েকদিন ভর্তি থাকার পরে, বুধবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি। স্বপ্নার স্বামী সুব্রত ক্ষেত্রপাল পেশায় দিনমজুর। সন্তানদের বাড়ি ফেরাতে ঢালাও আয়োজন করেছিলেন তিনি। চারচাকা গাড়ি ভাড়া করে ফুল-বেলুন দিয়ে সাজিয়ে ঘরে নিয়ে আসেন তিন সন্তানকে।
এই পরিবারে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম প্রথম হলেও। স্বপ্নার বাপের বাড়ির দিক থেকে বিষয়টি প্রথম নয়। আর এখানেই রয়েছে চমক। স্বপ্নার দিদিমার দুই যমজ মেয়ে ছিল। যাঁদের মধ্যে একজন স্বপ্নার মা গঙ্গা। এই গঙ্গাদেবীর ছয় সন্তান হয়। তাঁদের মধ্যে ২ জন যমজ পুত্র সন্তান। আর গঙ্গাদেবীর মেয়ে স্বপ্না দেবীর কোলে একেবারে এল তিন সন্তান। স্বপ্নার মা গঙ্গা ক্ষেত্রপাল বলেন, ‘আমার মায়ের যমজ সন্তান হয়েছিল। আমারও যমজ সন্তান হয়েছে। এখন আমার মেয়ের তিন সন্তান হলো। মেয়ে আর নাতিরা ভালো রয়েছে। খুব আনন্দ হচ্ছে।’ পরিবারে একসঙ্গে তিন সন্তান আশায় খুশি সকলেই। স্বপ্না নিজেই তিন সন্তানের নাম ঠিক করেছেন। বড় ছেলের নাম অঙ্কিত, মেজ ছেলের নাম আদি আর ছোট ছেলের নাম অগ্নি। তবে কে বড়, কে মেজ আর কে ছোট, তা নিয়ে নানা মত দিয়ে চলেছেন পড়শিরা।
স্বপ্না জানান, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দুই মাসের মাথায় তিনি জানতে পেরেছিলেন যে তাঁর গর্ভে তিন সন্তান রয়েছে। তখন থেকেই ডাক্তারের পরামর্শে সব রকম সাবধানতা নিয়ে চিকিৎসা চলতে থাকে। ১৭ জানুয়ারি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তানদের জন্ম দিয়েছেন স্বপ্না।
পরপর তিন প্রজন্মে যমজ সন্তান এবং ট্রিপলেট হওয়ার সঙ্গে কি কোনও জিনগত সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে? পান্ডুয়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (BMOH) মঞ্জুর আলম জানালেন, জিনগত কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তবে সেটা খুবই কম ক্ষেত্রে হয়। তবে আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম হলে অনেকসময়েই যমজ সন্তান জন্মে থাকে।