সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছে CBI, তদন্ত-ফাঁক ঢাকতেই কি তদ্বির?
আজ তক | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁস চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করতে চলেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে এমনটাই খবর। সোমবার সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিল শিয়ালদা আদালত। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই হাইকোর্টে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
সঞ্জয় রায়কে ফাঁসির সাজা দেয়নি শিয়ালদা আদালত। বরং বিচারকের দেওয়া রায়ে সিবিআই তদন্তই প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েই উঠে গিয়েছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে, তদন্তের ফাঁক গলেই কি বেরিয়ে গেল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়? সঞ্জয়ের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পরই গর্জে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, এই রায় চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে ফাঁসির সাজা চাইবে রাজ্য সরকার। সেই মতো হাইকোর্টে মামলাও হয়। রাজ্য সরকার কীভাবে ফাঁসি চাইতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সিবিআই আইনজীবী। এবার তারাই ফাঁসি চেয়ে আদালতে যাচ্ছে বলে খবর। তাহলে কি মুখ বাঁচাতেই এহেন সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের? উঠছে প্রশ্ন।
শিয়ালদহ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। বুধবার এনিয়ে আপত্তি জানায় সিবিআই। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাজ্য কীভাবে আবেদন করতে পারে,সেই প্রশ্ন তোলেন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার। তাঁর অভিমত, এই মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিল সিবিআইও। তদন্তও চালিয়েছে তারা। ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলের প্রশ্ন, নির্যাতিতার পরিবার, সিবিআই বা দোষী হাইকোর্টের দ্বারস্থ না হলে, রাজ্য কীভাবে আর্জি জানাতে পারে? সিবিআই আইনজীবী লালুপ্রসাদ যাদবের মামলার প্রসঙ্গও টেনেছেন। হাইকোর্টে তিনি জানান, লালুপ্রসাদের মামলায় রাজ্যের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি।
সিবিআই আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায়। লালুপ্রসাদের মামলার সঙ্গে এই মামলার তুলনা টানা উপযুক্ত নয় বলে জানান তাঁরা। রাজ্যের বক্তব্য,ওই মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে সব মামলা সিবিআইকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সিআরপিসি ৩৭৭ এবং ৩৭৮ ধারা অনুযায়ী রাজ্য সরকার আবেদন করতে পারে।
অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, তদন্ত এবং আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের আওতাধীন। আরজি কর মামলার তদন্ত প্রথমে রাজ্যের পুলিশ করেছিল। পরে সিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়। রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেন তিনি।
রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য কি না, তা নিয়ে শুনানি হবে আগামী সোমবার । হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ শুনবে এই মামলা।