• রেস্টরুম থেকে চুরি মহিলা চিকিৎসকের সোনার বালা, প্রশ্নের মুখে তমলুক মেডিক্যালের নিরাপত্তা
    বর্তমান | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • শ্রীকান্ত পড়্যা, তমলুক: তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওটি রুম সংলগ্ন ডক্টরস রুম থেকে মহিলা চিকিৎসকের সোনার বালা উধাও হয়ে গেল। চারটি সিসি ক্যামেরার মধ্যে একটি বন্ধ ছিল। বালা হাপিসের সঙ্গে সিসি ক্যামেরা অফ থাকার বিষয়টি সম্পর্কিত কিনা তদন্ত করছে পুলিস। কলেজের প্রিন্সিপালের দাবি, কোনও অবস্থায় সিসি ক্যামেরা বন্ধ থাকার কথা নয়। কিন্তু, ঘটনার সময় সিসি একটি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। সোমবার ওটি রুমে ঢোকার আগে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দোয়েল প্রধানের সোনার বালা, মোবাইল, মানিব্যাগ সবকিছু একটি ব্যাগে ভরে ওটি রুম সংলগ্ন ডক্টরস রুমে রেখেছিলেন। ওটি সেরে বেরিয়ে এসে ওই চিকিৎসক দেখেন, ব্যাগ আছে কিন্তু বালা উধাও। সোনার বালার খোঁজে টেবিলের নীচ থেকে রুমের চারপাশ খোঁজাখুঁজি করেও পাননি দোয়েলদেবী। এরপর তিনি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শর্মিলা মল্লিকের নজরে আনেন। তিনি বিষয়টি তমলুক থানার পুলিসের নজরে এনেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।


    আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর এরা঩জ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে চিকিৎসকদের বিশ্রাম নেওয়ার ঘরে নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষায় ৩০টি রেস্টরুম, ২১টি টয়লেট, ১৭৪টি সিসি ক্যামেরা এবং ৩৫টি লাইট লাগানো হয়েছে। গত ২৯অক্টোবর স্বাস্থ্যভবন থেকে দুই সদস্যের টিম এসে সেই কাজ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করে। শুধু তাই নয়, জেলা পুলিসের পক্ষ থেকে অর্ডার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্যাম্প করে পুলিস অফিসার ও কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তারপরও হাসপাতালের অন্দরমহল থেকে মহিলা চিকিৎসকের সোনার বালা চুরির ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এত সিসি ক্যামেরা, পুলিস মোতায়েন সত্ত্বেও কীভাবে সোনার বালা খোয়া গেল?


    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওটি সংলগ্ন ওই ডক্টরস রুমে মোট চারটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু, ওই মহিলা চিকিৎসকের ব্যাগ যে সিসি ক্যামেরার নজরদারির মধ্যে ছিল সেটি বন্ধ রাখা হয়। তাহলে কি আগেভাগে পরিকল্পনা করেই কেউ সোনার বালা হাতিয়েছে? সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার সিসি ক্যামেরা টেকনিশিয়ানকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এদিনই রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠক থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে, পুলিসের পক্ষ থেকে অন্য তিনটি ক্যামেরার ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। ওই তিন ক্যামেরার ফুটেজ থেকে সোনার বালা হাপিসের ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটন হতে পারে বলে পুলিস মনে করছে। 


    হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পেয়ে বুধবার সকালে তমলুক থানার পুলিসের একটি টিম সেখানে যায়। ওটি রুম লাগোয়া ওই ডক্টরস রুমে ঢুকে তদন্ত করে পুলিস। চারটির মধ্যে একটি সিসি ক্যামেরা বন্ধ থাকার বিষয়টি রহস্যজনক। হাসপাতালের কেউ এই ঘটনায় জড়িত কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 


    মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ শর্মিলা মল্লিক বলেন, ওই মহিলা চিকিৎসক ওটি রুমে ঢোকার আগে বালা এবং অন্যান্য জিনিস ব্যাগের মধ্যে ভরে ডক্টরস রুমে রেখেছিলেন। বেরিয়ে এসে দেখেন, সোনার বালা নেই। আমরা থানায় বিষয়টি জানিয়েছি। চারটির মধ্যে একটি সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিস সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেয়েছে। আমরা সেই ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিসের হাতে তুলে দেব। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)