বেআইনি টোটো ধরতে বাঁকুড়া শহরে ব্যাপক পুলিসি অভিযান
বর্তমান | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া শহরের যানজট রুখতে বেআইনি টোটো চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি। এব্যাপারে জেলাজুড়ে অভিযান চালানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পুলিস সুপারের নির্দেশ পেয়েই ট্রাফিক পুলিস ও বিভিন্ন থানা ম্যারাথন অভিযান শুরু করেছে। বাঁকুড়া শহরে বহু টোটো আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। চালকরা টোটো ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিসের উপর চাপ সৃষ্টি করতে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের কাছে তদ্বিরও করছেন। যদিও বেআইনি টোটো চলাচল বন্ধের ব্যাপারে পুলিস এবার অনমনীয় মনোভাব নেওয়ায় চালকরা প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন।
পুলিস সুপার বলেন, দিন তিনেক আগে আমি শহরের রাস্তা ধরে যাচ্ছিলাম। ওইসময় টোটোর কারণে যানজটের বিষয়টি লক্ষ্য করি। তখনই বেআইনি টোটোর বিরুদ্ধে টানা অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া জাতীয় ও রাজ্য সড়কে টোটো চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বেশিরভাগ টোটোর হেডলাইট রাতে জ্বলে না। ধীর গতিতে যাওয়ার ফলে দ্রুতগামী যানবাহনের সঙ্গে টোটোর প্রায়ই সংঘর্ষ হচ্ছে। জয়পুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় টোটোতে সওয়ার মাত্র কয়েক মাসের শিশুর মৃত্যু হয়। ফলে জেলাজুড়েই আমরা অভিযান শুরু করেছি। তবে গ্রামীণ এলাকায় কোনও টোটো চালকের বিরুদ্ধে এখনই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আপাতত আটক করার পর টোটো চালকদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে বাঁকুড়া শহরে দৈনিক ৩০-৪০টি টোটো আটক করা হচ্ছে। আটক করা টোটোগুলি শহরের একাধিক জায়গায় দাঁড় করিয়ে পুলিসি পাহারায় রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অন্যান্য জেলার মতো বাঁকুড়াতেও টোটোর দৌরাত্ম্য মাত্রা ছাড়িয়েছে। রাস্তায় যাত্রী ওঠানো নামানোর ক্ষেত্রেও টোটোচালকরা ট্রাফিক নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। কোনও ইঙ্গিত না দিয়েই টোটো হঠাৎ রাস্তার যে কোনও দিকে বাঁক নিয়ে নেয়। ফলে পিছনে থাকা যানচালক সমস্যায় পড়েন। যাত্রী তোলার জন্য রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়া লোকজনের দিকে টোটোচালকদের নজর থাকে। তাঁরা পথচারীদের জিজ্ঞাসা করতে করতে টোটো চালান। ওইসময় টোটোর গতি লাগাতার কমে বাড়ে। ফলে অন্যান্য যান চালকদের অসুবিধা হয়। ব্যাটারির চার্জ বাঁচাতে সন্ধ্যার পর হেডলাইট না জ্বালানোর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। ফলে অন্ধকার রাস্তায় দূর থেকে টোটোর গতিবিধি পথচারী ও অন্যান্য যানবাহনের চালকদের নজরে পড়ে না। পুলিস কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় টোটোর দৌরাত্ম্য কমবে বলে শহরবাসী মনে করছেন।