• কেন্দ্রের চক্রান্তে চায়ে ৭ শতাংশ ক্ষতি, ক্ষোভ, আলিপুরদুয়ারে তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
    বর্তমান | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • রবীন রায়, আলিপুরদুয়ার: কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্তে বাংলার চা’য়ে ৭ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে জেলার রিভিউ ও প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিবকে এই নির্দেশ দিয়েছেন। 


    উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকার ৩০ নভেম্বরের মধ্যে উত্তর ভারতে সমস্ত চা বাগানে পাতা তোলা সহ সমস্তরকম কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছে। কিন্তু সর্বত্র একই সময় চা বাগানের কাজ বন্ধ রাখার কেন্দ্রের ফরমানে বিতর্কের সূত্রপাত। 


    শীতের মরশুমে দেশের সব জায়গায় চা বাগানের কাজ বন্ধ থাকে। তবে বিভিন্ন এলাকায় আবহাওয়ার তারতম্যের দরুন বাগানে কাজ বন্ধের দিন স্থির করা হয়। কিন্তু দেশের সর্বত্র একই দিনে বাগানে কাজ বন্ধের কেন্দ্রীয় নির্দেশে বিতর্ক শুরু। 


    বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমের চা মালিক ও ব্যবসায়ীদের সুবিধা পাইয়ে দিতেই এই চক্রান্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কারণ নভেম্বর মাসে অসমে বাগানের সব কাজ হয়ে যায়। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে উত্তরবঙ্গে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চা পাতা তোলার কাজ হয়। অতিবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের উপদ্রবে বর্ষায় দার্জিলিং সহ উত্তরবঙ্গে চায়ের ক্ষতি হলে ডিসেম্বরের ৫-৬ শতাংশ চায়ের উৎপাদনে তা পুষিয়ে যায়। তাই রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে এই দিন বদলের আর্জি জানায়। 


    কিন্তু বাংলাকে বঞ্চনা করতেই কেন্দ্র এই আবেদনে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এই বঞ্চনার কথা তুলে বলেন, কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য বাংলার চা’য়ে ৭ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। যারজন্য বাংলার চা মালিক ও হাজার হাজার শ্রমিক সমস্যায় পড়েছেন। 


    তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে উপস্থিত মুখ্যসচিবকে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশে উত্তরের চা শিল্প মহলে খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে। এদিন প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, চা বাগানগুলিতে ১৩ হাজার পাট্টা দেওয়া হয়েছে। পাট্টার সঙ্গে ঘরের টাকাও দেওয়া হয়েছে। আলিপুরদুয়ারে ৬১টি চা বাগান আছে। শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করা হয়েছে। শ্রমিকদের বিনামূল্যে পানীয় জল ও বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। এই জেলায় ২২টি ক্রেশ করে দেওয়া হয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কালচিনি, রায়মাটাং সহ জেলায় পাঁচটি বন্ধ চা বাগান খুলে দেওয়া হয়েছে। তাতে সাড়ে সাত হাজার শ্রমিক নতুন করে জীবন পেয়েছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)