চারদিন ধরে অনুষ্ঠান, শোভাযাত্রার মাধ্যমে আমবাড়ি হাইস্কুলের প্ল্যাটিনাম জুবিলি শুরু
বর্তমান | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
অপু রায়, নকশালবাড়ি: ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুরের আমবাড়ি হাইস্কুলের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসব বুধবার থেকে শুরু হল। এই উপলক্ষ্যে চারদিন ধরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এদিন শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। প্রায় পাঁচ কিমি রাস্তা পরিক্রমা করে ঘোষপুকুর কলেজ মোড় হয়ে স্কুলে এসে শেষ হয় শোভাযাত্রা। আজ, বৃহস্পতিবার রক্তদান শিবির। ২৯ জানুয়ারি বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং স্বাস্থ্যশিবির। ৩০ জানুয়ারি হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে ভাওয়াইয়া ও বাউল গান শিল্পীরা পরিবেশন করবেন। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
তরাইয়ের চা বলয়ে স্কুলটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫১ সালে। দেশ স্বাধীনের চার বছর পর থেকে শুরু পথচলা। ওই সময় চা বাগানের মালিক, জোতদার, বাগানের পদস্থ কর্মীদের উদ্যোগে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের শিক্ষার প্রসারে প্রতিষ্ঠিত হয় আমবাড়ি স্কুল। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ডিএম মণ্ডল, ললিতমোহন অধিকারী, সত্যগোপাল রায়, কুমুদরঞ্জন রায় প্রমুখ ব্যক্তি। প্রথমদিকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হতো। ষাটের দশকে নকশাল আন্দোলনের সূত্রপাত। যার কোপ পরে স্কুলের উপর। স্কুলের আসবাবপত্র, নথিপত্র ও স্কুল ঘরের ক্ষতির জেরে ১৯৬৬ ও ’৬৭ এই দুই বছর পঠনপাঠন বন্ধ থাকে। তবে যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে ’৬৮ সালে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর ছাড়পত্র পায় স্কুল। ১৯৮২ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৯৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ছাড়পত্র পায় এই স্কুল। একসময়ে তিন হাজার পড়ুয়া ছিল। একতলা থেকে তিনতলা করা স্কুল ভবন। নানান কারণে পরবর্তীতে পড়ুয়া কিছুটা কমে। তবে এখান থেকে পড়াশোনা করে বহু ছাত্রছাত্রী প্রতিষ্ঠিত এখন। দেশ-বিদেশে চাকরি করছেন অনেকেই। চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, গবেষক, অধ্যাপক, শিক্ষক, উকিল, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি আছেন তাঁদের মধ্যে অনেকে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আস্তিক মণ্ডল বলেন, বর্তমানে স্কুলে ১২০০ পড়ুয়া। ৩৩ জন শিক্ষক, শিক্ষিকা। এছাড়াও একজন লাইব্রেরিয়ান ও চারজন শিক্ষাকর্মী আছেন। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক কম্পিউটার শিক্ষা রয়েছে। শুধু তাই নয়, স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম, লাইব্রেরির পরিকাঠামো উন্নয়নে আমরা জোর দিয়েছি। খেলাধুলো ও শারীরশিক্ষাতে পড়ুয়ারা পিছিয়ে নেই। এনসিসি ইউনিট চালু করতে পেরেছি আমরা। এছাড়া ইলেক্ট্রনিক্স ও কনস্ট্রাকশন এই দু’টি বিষয়ে ভোকেশনাল কোর্স করা হচ্ছে। আমরা স্কুলের প্ল্যাটিনাম জুবিলিকে স্মরণীয় করে রাখতে বেশকিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। যা ধাপে ধাপে হবে। এদিন শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন জেলার শিক্ষক নেতা সুপ্রকাশ রায়।