সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: কালচিনির দলসিংপাড়া চা বাগানের ঝোপ থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিস বাইশ বছরের এক যুবতীর দেহ উদ্ধার করে। বাগানের শ্রমিক ওই যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধারের পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে দলসিংপাড়া। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, মেয়েকে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে খুন করে জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে মৃতের পরিবার সহ স্থানীয় বাসিন্দারা দলসিংপাড়ায় ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। অবরোধের দরুন জেলার ওই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে তীব্র যানজট হয়। পুলিস অবশ্য মৃতদেহ উদ্ধারের পর পরই এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।
যদিও পুলিস ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে মানতে রাজি নয় যুবতীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। যুবতীর মৃতদেহ দেখে এবং যেখান থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে সেই জায়গাটি দেখে ধর্ষণের দাবি এখনই মানতে চাইছেন না তদন্তকারী অফিসাররা। আলিপুরদুয়ারের পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী বুধবার বলেন, দলসিংপাড়া চা বাগানে এক যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আমরা এখন মৃতের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। ওই রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত এখনই ধর্ষণের কথা বলা যাবে না। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, ধৃত যুবকের সঙ্গে ওই যুবতীর সম্পর্ক ছিল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে যুবতী নিখোঁজ ছিল। তাঁর বাড়ির লোকজন এনিয়ে জয়গাঁ থানায় ডায়েরিও করে। এরপর পুলিস তদন্তে নেমে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ দলসিংপাড়া চা বাগানের ৪ নম্বর সেকশনের একটি ঝোপ থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। দেহ উদ্ধারের পর পুলিস যুবতীর প্রেমিক ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে।
মৃতের বাড়ির লোক পুলিসের কাছে মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ আনে। মৃতার দিদির অভিযোগ, মঙ্গলবার বউদির মোবাইল ফোনে ধৃত যুবকের ফোন আসে। তারপরেই বোন নিখোঁজ হয়ে যায়। ওই যুবক তাঁর বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বোন রাজি ছিল না। ওই যুবকই বোনকে ধর্ষণ করে খুন করেছে। ধৃতের ফাঁসি চাই।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ও ধৃতের ফাঁসির দাবিতে বুধবার সকাল থেকে স্থানীয়রা দলসিংপাড়ায় এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করেন। পুলিস স্থানীয়দের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত চার ঘণ্টা পরে পুলিস অবরোধ তুলে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
বাগানের ঝোপে ওই যুবতীর সাইকেল ও ব্যাগ পড়েছিল। তাঁর পরনের পোশাকও ঠিকঠাক ছিল। ফলে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনে পুলিস এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দিকেই তাকিয়ে আছে।