রাজ্যের আর্জির পরই সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবি তুলে হাইকোর্টে গেল সিবিআই
বর্তমান | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: রাজ্য আবেদন জানানোর পরই টনক নড়ল সিবিআইয়ের। আর জি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে বুধবার তারাও দ্বারস্থ হল কলকাতা হাইকোর্টের। সূত্রের খবর, দিল্লিতে এজেন্সির সদর দপ্তরের তরফেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভয়ার বাবা-মা অবশ্য সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। এদিন অবশ্য সেই মামলার শুনানি হয়নি। আগামী বুধবার পরবর্তী দিন ধার্য করেছে দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ।
গত সোমবার আর জি কর মামলায় সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা শোনায় শিয়ালদহ আদালত। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, দোষীর ফাঁসির শাস্তি চেয়ে রাজ্য সরকার হাইকোর্টে আবেদন জানাবে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই উচ্চ আদালতে যায় রাজ্য। এদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি। সেই মামলায় স্পষ্টতই রাজ্যের এই ফাঁসির আবেদন করার এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলে সিবিআই। তাদের আইনজীবী তথা ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার দাবি করেন, নিম্ন আদালতেও কেন্দ্রীয় এজেন্সি দোষী সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিল। এক্ষেত্রে নির্যাতিতার পরিবার, সিবিআই কিংবা দোষী হাইকোর্টের দ্বারস্থ না হলে, রাজ্য কীভাবে এই আবেদন করতে পারে? এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। আপাতত রাজ্যের আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানি হবে। কিন্তু রাজ্য ফাঁসির আবেদন জানাতেই সিবিআইয়ের এমন তৎপরতা কেন? আইনজীবীদের একাংশের মতে, নিম্ন আদালতে আর জি কর কাণ্ডকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আর তাতে যথেষ্ট মুখ পুড়েছে তাদের। তাই নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জমা পড়া আবেদনে প্রথম পক্ষ হওয়ার লক্ষ্যেই তাদের এই পদক্ষেপ।
আর জি কর কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী মার্চ মাসে তার শুনানি হওয়ার কথা। এর মধ্যেই দোষী সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণা হয় নিম্ন আদালতে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ না করলেও সিবিআই তদন্তে গাফিলতির দাবি তুলে নতুন করে সর্বোচ্চ আদালতে আর্জি জানিয়েছেন অভয়ার বাবা-মা। তাঁদের আইনজীবী করুণা নন্দী এদিন সেই মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন জানান। কিন্তু তালিকা প্রকাশ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কিছু কারণ দেখিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্য মামলা সরিয়ে রেখে এটি শোনা হবে না।