লক্ষ্য ভোট, ডিসেম্বরেই সব কাজ শেষের নির্দেশ মমতার
বর্তমান | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে ওয়ার্ম আপ শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। কোন কোন ইস্যুতে সরকার বিরোধী হাওয়া তোলা যাবে, সেই অঙ্ক কষতে ব্যস্ত লাল ও গেরুয়া শিবিরের ভোট ম্যানেজাররা। তৃণমূল অবশ্য ২০১১ পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনে উন্নয়নকে প্রধান ইস্যু করে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মানুষের জন্য কাজ করে তবেই জনতার দরবারে ভোট চাইতে যেতে হবে। ২৬-এর লড়াইয়ে তাঁর প্রধান অস্ত্র রাজ্যবাসীর জন্য আরও উন্নয়ন। তাই এখন থেকে আগামী অর্থবর্ষের বরাদ্দ অর্থের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দিলেন তিনি। বুধবার আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের কাজ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়া উচিত। পরের অর্থবর্ষ (২০২৫-২৬) থেকে টার্গেট হবে ডিসেম্বর। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। এখন থেকে সেভাবেই স্ট্র্যাটেজি সাজিয়ে মাঠে নামতে হবে।’
জেলা সফরে গিয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ যেভাবে বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করছেন, সেই উদাহরণ তুলে ধরে এদিন বিডিও, এসডিও, ডিএমদের ‘ফিল্ড ভিজিট’ বাড়ানোর কথা মনে করিয়ে দেন মমতা। বৈঠকে শেষে এই সূত্রেই ফেসবুকে লেখেন, ‘মনে রাখতে হবে, আমরা কেবলমাত্র মানুষের কাজ করতে এসেছি। সেখানে কোনও গাফিলতি বা শৃঙ্খলাভঙ্গের স্থান নেই। মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হতে হবে আমাদের। কোনওরকম বেআইনি কাজ রেয়াত করা হবে না। আমাদের লক্ষ্য শুধুই জনসেবা। সেখানে সততাই হবে একমাত্র পন্থা।’
কেন্দ্র ‘১০০ দিনের কাজ’-এর টাকা না দেওয়ায় বিকল্প হিসেবে ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য। কিন্তু অনেক জেলায় সেই প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। ঠিকাদাররা যাতে এলাকার জবকার্ড হোল্ডারদের কাজ দেন, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘ঠিকাদার বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে কাজ করল। আর স্থানীয়রা কাজ পেল না, এটা হবে না।’ আলিপুরদুয়ার জেলায় ক্ষুদ্রশিল্প, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ, বন, পর্যটন সহ প্রত্যেকটি দপ্তরের প্রকল্পগুলি কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, এদিন তার রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরে অগ্রগতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা। বলেন, ‘ভোটের জন্য ছ’মাস নষ্ট হয়েছে। বর্ষায় অনেক কাজ করা যায় না। কিন্তু কাজ থেমে থাকলে চলবে না। নির্দিষ্ট টাইমলাইন মেনেই কাজ শেষ করতে হবে। মনে রাখবেন সব কাজে আমরা নজরদারি করছি। কিছু কাজ দায়সারা ভাবে শেষ করা হচ্ছে। সব জেলাকে এ বিষয়ে সতর্ক করছি। ভাববেন না, এখান থেকে কলকাতার দূরত্ব অনেক। এখন এক সেকেন্ডে যোগাযোগ করা যায়।’ আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের একাধিক বিষয়ে অসন্তোষ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘আমি জেলায় এসে মিটিং না করলে কাজ হবে না? আই ডোন্ট লাইক ইট।’ তিনি এদিন আরও জানিয়েছেন, সংযোগকারী রাস্তা না থাকলে শিল্প তালুকের জন্য জমি চিহ্নিত করা যাবে না। প্রতিটি বাংলা সহায়তা কেন্দ্রকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পাশাপাশি টেলিফোন সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।