• বেআইনি বাড়িতে পুরসভার জলের লাইন! কাঠগোড়ায় পুরসভা
    এই সময় | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: কয়েক মাস আগে গার্ডেনরিচে একটি বহুতল ভেঙে পড়ায় ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, বেআইনি বাড়িতে যাতে কোনও ভাবেই জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া হয়। সেই মতো আলাদা করে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন কলকাতার পুর কমিশনার।

    তাতে বলা হয়েছিল, বাড়ির কমপ্লিশন সার্টিফিকেট না–থাকলে সেই বাড়িতে জল ও ড্রেনেজ কানেকশন দেওয়া যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশ কি আদৌ পালিত হচ্ছে? নাকি কলকাতা পুরসভার নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন প্রোমোটাররা? ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডে বহুতল হেলে পড়ার পর পুরসভার অন্দরেই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

    পুরসভা সূত্রের খবর, এই ঘটনার জেরে ক্রিস্টোফার রোডে যে দু’টি বহুতল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলি তৈরি হয়েছিল সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে। দুটো বাড়িরই কোনও সিসি (কমপ্লিশন সার্টিফিকেট) নেই। তা সত্ত্বেও সেখানে পুরসভার জলের লাইন রয়েছে। নিকাশি সংযোগও রয়েছে। জঞ্জাল নিয়ে যাওয়ার জন্য রোজ সকালে পুরসভার গাড়ি আসে। বিদ্যুৎ সংযোগও পেয়ে গিয়েছেন ফ্ল্যাট মালিকরা। অনেকেই ফ্ল্যাট মিউটেশন করিয়ে নিয়েছেন। এককথায় পুরসভার সমস্ত সুযোগ–সুবিধা ভোগ করছেন তাঁরা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যে বাড়ির কোনও কমপ্লিশন সার্টিফিকেট নেই তারা কী ভাবে জল ও নিকাশি সংযোগ পেয়ে গেল? বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আগে কেন কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হল না?

    পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার অবশ্য দাবি, ‘বেআইনি বাড়িতে জল ও নিকাশি সংযোগ নেওয়ার জন্য বেশির ভাগ প্রোমোটার পুরসভার কাছে আসে না। তারা নিজেরাই প্লাম্বার ডেকে বেআইনি ভাবে জলের সংযোগ নিয়ে নেন। একই ভাবে পুরসভাকে না জানিয়েই তারা ড্রেনেজ লাইন জুড়ে নেন।’ তাঁর কথায়, ‘জলের পাইপ এবং ড্রেনেজ লাইন মাটির তলা দিয়ে যায়। কোনটা আইনি আর কোনটা বেআইনি, সেটা সাধারণ মানুষ বুঝতেই পারেন না। একমাত্র স্থানীয় কাউন্সিলার যদি বাধা দেন, তবেই সেটা নিয়ে হইচই হয়। তখন পুরসভার লোকেরা গিয়ে জলের লাইন কিংবা ড্রেনের কানেকশন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে আসে। আর কাউন্সিলার আপত্তি না করলে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।’

    কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং বলেন, ‘জল কিংবা ড্রেনেজ কানেকশনের জন্য কেউ পুরসভার অনুমতি নিয়েছে সেটা দেখার জন্য পুরসভায় কোনও নজরদারি ব্যবস্থা নেই। কেউ যখন সিসি নেওয়ার জন্য বিল্ডিং বিভাগের কাছে আবেদন জানায় তখন এগুলি পরীক্ষা করে দেখা হয়। তা না–হলে জানার কোনও সুযোগ নেই।’ তাঁর কথায়, ‘যখন কোনও ঘটনা ঘটে তখন এ সব নিয়ে হইচই হয়। কিন্তু কেউ খোঁজ নিয়ে দেখে না কলকাতা পুরসভার প্রত্যেকটা বিভাগে কত শূন্য পদ রয়েছে। লোক না–থাকলে কাকে দিয়ে নজরদারি করবে?’

  • Link to this news (এই সময়)