পর পর তিন দিন বাড়ল রাতের তাপমাত্রা। রবিবার পর্যন্ত পারদ ঊর্ধ্বমুখীই থাকবে বলে পূর্বাভাস শুনিয়েছে হাওয়া অফিস। একইসঙ্গে ১২ জেলায় রয়েছে ঘন কুয়াশার পূর্বাভাসও। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঘন কুয়াশার দাপট লক্ষ্য করা গিয়েছে। কমেছে দৃশ্যমানতা। ঘন কুয়াশার কারণে সাত সকালে হুগলি নদীতে আটকে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ডায়মন্ড হারবার ফেরিঘাট থেকে কুকড়াহাটির উদ্দেশে রওনা দেয় লঞ্চটি। ঘন কুয়াশার কারণে নদীর চরে আটকে যায় লঞ্চটি। প্রায় ১৫০ জন যাত্রী ছিলেন বলে খবর। দমকল ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এসে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে বাঁকুড়া থেকে হুগলি। কোনও কোনও জায়গায় দৃশ্যমানতা ১০০ মিটার বা তার নীচে নেমে এসেছে। দক্ষিণবঙ্গের ১২ জেলায় ঘন কুয়াশার সতর্কতা রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া রয়েছে সেই তালিকায়।
ঘন কুয়াশার কারণে সকাল থেকেই যানবাহনের গতি ধীর। প্রভাব পড়েছে লঞ্চ ঘাটগুলিতেও। চুঁচুড়া-নৈহাটি লঞ্চঘাটে চুঁচুড়া থেকে প্রতিদিন ভোর ৫টায় প্রথম লঞ্চ ছাড়ে। কিন্তু কুয়াশার কারণে এ দিন তা ছাড়তে পারেনি। ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়। কুয়াশার কারণে গঙ্গায় কিছু দেখা যাচ্ছে না। এমনকী জেটিও ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছেন না যাত্রীরা। এই অবস্থায় ঝুঁকির পারাপারে নারাজ ঘাট কর্তৃপক্ষ।
ঘন কুয়াশার প্রভাব পড়েছে গণপরিবহণে। একাধিক জায়গায় ফেরি সার্ভিস বন্ধের পাশাপাশি ট্রেনের গতিও নিয়ন্ত্রিত। সাঁতরাগাছি, শালিমার, আমতা, দিঘা, পাঁশকুড়ায় রেল পরিষেবায় কুয়াশার প্রভাব পড়েছে। পূর্ব রেল, দক্ষিণ পূর্ব রেলের বিভিন্ন শাখায় ধীর গতি ট্রেনের।
বনগাঁ লাইনের আপ ও ডাউন ট্রেন চলাচলেও প্রভাব পড়েছে। সকালের দিকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট দেরিতে চলেছে বেশ কিছু ট্রেন। আকাশপথেও পড়েছে প্রভাব। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, সকাল সাড়ে পাঁচটার পর থেকে বিমানবন্দরের দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারে নেমে যায়। ফলে দমদম বিমানবন্দর থেকে একাধিক বিমান ছাড়তে দেরি হয়েছে। বিমান অবতরণেও সমস্যা হয়েছে সকাল থেকে।
এক দিকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, অন্য দিকে পুবালি হাওয়ার দাপটে শীত পিঠ দেখাতে শুরু করেছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় বেড়েছে দিন-রাতের তাপমাত্রা। তবে সোমবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় পারাপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ বসন্ত পঞ্চমীর আগে নামবে তাপমাত্রা।
সোমবার রাতের তাপমাত্রা ছিল ১৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার তা বেড়ে ১৬.২ ডিগ্রি হয়, বুধবার আরও কিছুটা বেড়ে হয় ১৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের তাপমাত্রাতেও একই পরিবর্তন। সোমবার যা ২৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল, মঙ্গলবার ও বুধবার যথাক্রমে বেড়ে হয়েছে ২৬.৭ ডিগ্রি ও ২৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।