• পদ্মে ‘ডিসকমফর্ট’ বাড়িয়ে শুভেন্দুর পাশে তথাগত, কটাক্ষ তৃণমূলের
    এই সময় | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: ‘কমফর্ট’ বিতর্কে বঙ্গ–বিজেপিতে চর্চা চলছেই। সল্টলেকের একটি হোটেলে মঙ্গলবার বিজেপির সাংগঠনিক একটি বৈঠকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাজির না–থাকা নিয়ে ‘কমফর্ট’ প্রসঙ্গ তোলেন সুকান্ত মজুমদার। আবার বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর অবস্থান জানিয়েছিলেন শুভেন্দু।

    বুধবার বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় আবার শুভেন্দুর পাশে দাঁড়ালেন। তাঁর ব্যাখ্যা, বিরোধী দলনেতা কোনও প্রতিবাদ মিছিলে উপস্থিত থাকলে তাঁর পক্ষে দলীয় মিটিংয়ে থাকা সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এখন বড় হয়েছে এবং সেই কারণে একজন শীর্ষ নেতাকে জনসংযোগের দায়িত্ব ও অন্য কোনও শীর্ষ নেতাকে সংগঠনের দায়িত্ব সামলাতে হবে বলেও পর্যবেক্ষণ বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতার।

    সল্টলেকের একটি হোটেলে মঙ্গলবার বিজেপি–র বৈঠকে শুভেন্দু উপস্থিত না–থাকায় সুকান্ত মন্তব্য করেন, ‘উনি (শুভেন্দু) এই ধরনের বৈঠকে থাকতে কমফর্ট বোধ করেন না।’ আবার এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খানিকটা স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে শুভেন্দু প্রকাশ্যে বলেন, সুকান্ত যে মন্তব্য করেছেন, তার ব্যাখ্যা তাঁকেই দিতে হবে।

    এই পরিস্থিতিতে বুধবার ন্যাশনাল লাইব্রেরির অডিটোরিয়ামে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানের পর তথাগত বলেন, ‘শুভেন্দু যদি ওই সময়ে মিছিলে উপস্থিত থাকে‍ন, তা হলে তাঁর পক্ষে মিটিংয়ে থাকা সম্ভব নয়। এখন দল বড় হয়েছে। ফলে একজন শীর্ষ নেতাকে সব সময়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে থাকতেই হবে।’ অতীতে তথাগত একাধিক ইস্যুতে শুভেন্দুর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন বলে বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের পর্যবেক্ষণ।

    এই বিতর্ক তৈরি হওয়ার জন্য এ দিন অবশ্য শুভেন্দু মিডিয়ার একাংশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। রামমন্দিরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে কর্মসূচির ফাঁকে তিনি বলেন, ‘সুকান্তবাবু কী বললেন, জন বার্লা কোথায় যাচ্ছেন, এগুলো নিয়ে মিডিয়া চর্চা করছে!’ তাঁর ব্যাখ্যা, কারও সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত লড়াই নেই, সবাই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে লড়াই করছেন।

    সুকান্তও এ দিন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে থাকলেও নতুন করে কিছু বলেননি। তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে কুণাল ঘোষ গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকে কড়া ভাষায় শুভেন্দুর সমালোচনা করে চলেছে‍ন।

    যদিও বিজেপির মধ্যে যত নেতা আছেন, তাঁদের মধ্যে শুভেন্দু–ই যোগ্যতম বলে কুণালের পর্যবেক্ষণ। তিনি এ দিন বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিজেপিতে গিয়েছেন। যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন (শুভেন্দু), তার জন্য সব সময়ে তাঁর বিরোধিতা করব। কিন্তু বিজেপিতে যত নেতা আছেন, তাঁদের মধ্যে শুভেন্দু সকলের থেকে সাংগঠনিক ভাবে বেশি অভিজ্ঞ ও যোগ্য।’

    তথাগত এ দিন শুভেন্দুর পাশে দাঁড়ালেও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা আবার পরোক্ষে তথাগতকে এ দিন খোঁচা দিয়েছেন। তথাগতর পাশে বসে থাকা দিলীপ ঘোষের প্রশংসা করেছেন তিনি। ন্যাশনাল লাইব্রেরির অডিটোরিয়ামে এই সভায় তথাগতর উদ্দেশে মানিক বলেন, ‘উনি যখন ত্রিপুরার রাজ্যপাল ছিলেন, তখন অবশ্য দেখা করতে চাইলে সময় দিতেন না। তখন আমি সাধারণ নাগরিক ছিলাম।’ সেই জায়গায় দিলীপ ঘোষকে ‘সবার প্রিয় নেতা’ বলে উল্লেখ করেছেন মানিক।

  • Link to this news (এই সময়)