কৌশিক দে, মালদা
সন্ধেবেলা নিজের টেলারে কাজে ব্যস্ত ছিলেন মনসুর। হঠাৎ এক লটারি বিক্রেতা সেখানে হাজির হয়ে তাঁর হাতে একরকম জোর করেই গছিয়ে দেন একটা টিকিট। কিন্ত নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে হুট করে ১২০ টাকা পকেট থেকে বের করতে পারেননি তিনি।
অগত্যা ধার–বাকির খাতায় লিখে রাখলেন লটারি বিক্রেতার হিসেব। ওই রাতেই আবার রাস্তার পাশের সেই অস্থায়ী দর্জির দোকানে ভিড় করলেন লটারি বিক্রেতা–সহ অনেকে। কারণ ১ কোটির লটারি জিতেছেন মনসুর মোমিন।
ইংরেজবাজার থানার মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানপুরের বাসিন্দা মনসুর পেশায় দর্জি। সারাদিনের পরিশ্রমে কোনও দিন ২০০ টাকার আবার কোনও দিন খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হতো তাঁকে। বৃদ্ধ বাবা–মা স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে সংসার চালেতে কালঘাম ছুটত মনসুরের।
১ কোটি টাকার লটারি জিতে তিনি বললেন, ‘প্রথমে বিশ্বাস করিনি। এই টাকা থেকে মিলকি স্ট্যান্ডে একটা স্থায়ী দোকান কিনব। একটা বাড়িও তৈরি করে অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণ করব। বৃদ্ধ বাবা–মাকে আর কষ্ট পেতে দেবো না।’
শুধুমাত্র কয়েকজন প্রতিবেশী ও পুলিশকে এই লটারি জেতার কথা জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু চিন্তায় রয়েছেন মনসুরের স্ত্রী রাবিয়া বিবি। তাঁর কথায়, ‘আমরা গরিব মানুষ। কোনও দিন একসঙ্গে এতগুলো টাকার কথা ভাবতেই পারি না। এখন চিন্তা হচ্ছে। এই টাকার জন্য কোনও রকম সমস্যা তৈরি হবে না তো? তবে আর আমাদের কষ্টের দিন দেখতে হবে না, এটা ভেবেই ভালো লাগছে।’