সৌমেন ভট্টাচার্য ও অয়ন ঘোষাল: ফের হেলে পড়ল বিল্ডিং। শহর কলকাতার পর এবার বিধাননগর। এর আগে বাঘাযতীন, কামারহাটি ও ট্যাংরায় বিল্ডিং হেলে পড়ে। এবার বিধাননগরে ফের গোটা বিল্ডিং হেলে পড়ল। বিধাননগর পুর নিগমের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ নারায়ণপুর অঞ্চলে একটি বিল্ডিং হেলে পড়েছে। শহর কলকাতায় একের পর এক বিল্ডিং হেলে পড়ার খবর সম্প্রচার হতেই নারায়ণপুরের এই বিল্ডিংয়ে বসবাসকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় আতঙ্কে এলাকাবাসী। সূত্রের খবর, গোটা বিল্ডিংটাই বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল।
ওদিকে ট্যাংরার ঘটনায় এদিন মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, আগের বাড়ির বাসিন্দারা এখনও আমাদের কোনও বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। কলকাতা পুরসভার রেকর্ডে এখনও এই বাড়ির কোনও স্যাংশন প্ল্যান খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশের সাদা বাড়ির (নির্মীয়মাণ) আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যে বাড়িতে লোক আছে, সেই বাড়িতে আজ স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি টেস্ট হল। তারপর ওনারা রিপোর্ট দেবেন। এফআইআর তো নিশ্চিত হয়েছে। হেলে পড়া বাড়ি নিয়ে এফআইআর হবেই। তবে কতটা ভেঙে ফেলা হবে, সেটা ইঞ্জিনিয়াররা ঠিক করবেন। স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি দেখে। সব হেলে পড়া বাড়ি মানেই বিপজ্জনক নয়। স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি ঠিক থাকলে সেটা বিপজ্জনক নয়। কলকাতায় এরকম অনেক বাড়ি আছে, যেগুলি সামান্য হেলে পড়েছে কিন্তু বিপজ্জনক নয়। বছরের পর বছর রয়েছে। আর হেলে পড়া বাড়ি যদি বিপজ্জনক অবস্থায় থাকে, তবে তার স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি দিতে অনুরোধ করছে কলকাতা পুরসভা। এটা কোনও নির্দেশ বা রুলস নয়, আবেদন করা হয়েছে।
মেয়র আরও বলেন, গার্ডেনরিচ কাণ্ডে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তো আর খুঁজিনি। কোনটা ৬০ কি কোনটা ৭০ বছরের বাড়ি রয়েছে! সবগুলো সম্ভব নয়, যতগুলো দেখা সম্ভব, বেআইনি কিনা দেখা হয়েছে। রেগুলারাইজেশন একটা লিমিট পর্যন্ত করা যেতে পারে। পুরো বাড়ি বেআইনি হলে, রেগুলারাইজেশন হয় না। ফ্লোরের পর ফ্লোর বেআইনি হলে, রেগুলারাইজেশন হয় না।
পাশাপাশি, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপন সাহা জানান, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি খালি করার নোটিস এখন-ই কার্যকর নয়। সকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞ এসে সরেজমিনে দেখে গিয়েছেন। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার তিনি রিপোর্ট দেবেন। রিপোর্টে যদি বাড়ি ভেঙে ফেলার সুপারিশ থাকে তাহলে বাড়ি খালি করা হবে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় মেরামতির জন্য সাময়িকভাবে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানো হবে। পরে আবার তারা এখানেই ফিরে আসবেন। আর যদি বাড়ি ভাঙতেই হয় তাহলে আপাতত বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে, 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে বিকল্প বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে তাঁদের।
বিপজ্জনকভাবে হেলে পড়া বাড়ি দুটির মধ্যে একটি বাড়ির বাসিন্দা চম্পা রাউথ যদিও বলছেন, পুরসভা যা-ই বলুক, কোথাও যাব না। যাব-ই বা কোথায়? এখনও ঠিক করিনি।