• যত কাণ্ড এক জায়গায়! আরজি করে নির্যাতিতার দেহে অপর মহিলার ডিএনএ কীভাবে? রহস্য ভেদ
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • যত গণ্ডগোল ময়নাতদন্তেই। আর তার জেরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে নির্যাতিতা চিকিৎসকের দেহে আরও এক মহিলার ডিএনএ পাওয়া গিয়েছে বলে মনে করছে শিয়ালদা আদালত। নিম্ন আদালতের রায়ের কপিতে জানানো হয়েছে, নির্যাতিতার দেহে যে ডিএনএ নমুনা পাওয়া গিয়েছে, সেটার সঙ্গে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের নমুনার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। সেইসঙ্গে এক মহিলারও খুব সামান্য ডিএনএ নমুনা পাওয়া যায়। সেটার ভিত্তিতে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, অপরাধস্থলে আরও কেউ ছিল। কিন্তু আদালত জানিয়েছে, যা তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, তাতে আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় একমাত্র সঞ্জয় যুক্ত ছিল। অন্য কারও যোগ থাকার সম্ভাবনা সহজেই খারিজ করে দেওয়া যায়।

    আর নির্যাতিতার দেহে কীভাবে এক মহিলার ডিএনএয়ের নমুনা পাওয়া গিয়েছে, সেটাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে শিয়ালদা আদালতের রায়ের কপিতে। আদালত জানিয়েছে, নির্যাতিতার স্তনবৃন্ত থেকে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তা সঞ্জয়ের ডিএনএয়ের সঙ্গে ১০০ শতাংশ মিলে গিয়েছে। অপর এক মহিলার ডিএনএ নমুনার যে সামান্য উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয় যে ঘটনার পিছনে এক মহিলাও জড়িত আছে। তাকে আড়াল করা হচ্ছে।

    সেই পরিস্থিতিতে বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন, ডিএনএয়ের রহস্যভেদ করতে তিনি সুরতহাল এবং ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো খতিয়ে দেখেন। ময়নাতদন্তের ভিডিয়োয় দেখেছেন যে মেঝেতে অন্য মহিলাদের মৃতদেহ রাখা আছে। যে ট্রে'তে নির্যাতিতা চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত করা হয়, সেটা জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। নমুনা সংগ্রহের আগে ডোম গ্লাভস বা অ্যাপ্রন পরিবর্তন করেননি। ময়নাতদন্তের জন্য যে ছুরি বা কাঁচি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটাও জীবাণুমুক্ত করা হয়নি।


    অর্থাৎ ময়নাতদন্তের সময় নির্দিষ্ট বিধি মেনে চলা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিচারক। তাঁর মতে, একেবারে নিয়ম মেনে ময়নাতদন্ত করার মতো পরিকাঠামো নেই। এরকম পরিকাঠামোর মধ্যেই ময়নাতদন্ত করা ছাড়া চিকিৎসকদের কাছে কোনও পথ নেই। ওই ভিডিয়ো থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তা দূষিত হয়ে যাওয়ার সবরকমের সম্ভাবনা আছে। আর সেজন্য চিকিৎসকদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করেছেন বিচারক।


    রায়ের কপিতে জানানো হয়েছে, তদন্তকারী সংস্থার তরফে সওয়াল করা হয়েছিল যে নমুনা দূষিতকরণের বিষয়টা জানিয়েছেন সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর এবং সায়েন্টিস্ট-সি সোমা রায়। সেই পরিস্থিতিতে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে দাবি করা হয় যে অন্য কাউকে আড়াল করতেই ইচ্ছাকৃতভাবে নমুনা দূষিত করা হয়েছিল। 


    বিচারক জানিয়েছেন, সেইসব সওয়ালের প্রেক্ষিতে আদালতের কাজ হল যে ইচ্ছাকৃতভাবে নমুনা দূষিত করা হয়েছিল কিনা। আর যাবতীয় দিক খতিয়ে দেখে অটোপসি চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছিল নির্যাতিতার পরিবার, তা গ্রহণ করছেন না তিনি। সেইসঙ্গে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঞ্জয় জড়িত ছিল না, সেই যুক্তিও খারিজ করে দিচ্ছেন।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)