আরজি কর হাসপাতালের মামলায় আমৃত্যু সাজা খাটছে বন্দি সঞ্জয় রায়। প্রেসিডেন্সি জেলে এখন সে কী করছে? এই কৌতূহল এখন সকলের। আর তখনই জেল সূত্রে জানা গেল, আবাসিকদের ওয়ার্ডে রোলকলের কাজ করার জন্য প্রশিক্ষণ চলছে ধর্ষণ–খুনে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের। এখানে যারা বিচারাধীন বন্দি আছে তাদের ক্ষেত্রে এই কাজ করবে না সঞ্জয় রায়। এই কাজ সে করবে প্রেসিডেন্সি জেলের সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের ক্ষেত্রে। দু’বেলা সে এই কাজে নিযুক্ত থাকবে। ইতিমধ্যেই বুধবার থেকে এই কাজের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। সঞ্জয়ের তিনমাস ধরে চলবে এই প্রশিক্ষণ।
এদিকে আইন অনুযায়ী, সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের দৈনিক মজুরিতে কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু এই তিনমাসের প্রশিক্ষণ চলাকালীন মিলবে না মজুরি। সেক্ষেত্রে সঞ্জয়ও তিনমাস পাবে না মজুরি। প্রশিক্ষণ শেষে কাজ শুরু হলে তার পরেই দৈনিক মজুরির টাকা সাজাপ্রাপ্ত বন্দির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে। সঞ্জয়ের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে কিনা তা জানা যায়নি। না থাকলে অবশ্য জেলের পক্ষ থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হবে। রোলকলের প্রশিক্ষণ এখন শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে আগামী এপ্রিল মাস থেকে মজুরি মিলবে সঞ্জয়ের। এখন প্রশিক্ষণ নিতে সঞ্জয়কে সাতসকালে ডেকে দেওয়া হয়। তারপর ফ্রেশ হয়ে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। টানা দু’ঘন্টা চলে প্রশিক্ষণ–পর্ব। সঞ্জয়কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে দুই প্রবীণ সাজাপ্রাপ্ত বন্দি এবং জেলের দুই কর্মী বলে সূত্রের খবর।
এসব চললেও সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চায় রাজ্য সরকার। তাই কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। সেটা দেখে সিবিআইও পরে গিয়েছে একই দাবি নিয়ে। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবারের শিয়ালদা আদালতের রায় পছন্দ না হলেও ফাঁসির দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে যাননি। সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন বিচারের দাবিতে। কলকাতা হাইকোর্টেও তাঁদের অবস্থান একই। তদন্তে গাফিলতি হয়েছে। সঞ্জয় রায় এখন প্রেসিডেন্সি জেলের ৬ নম্বর সেলে থাকে। সূত্রের খবর, আগামী দিনে সঞ্জয় রায়ের কাজের পরিধি বাড়বে। তাই চলছে প্রশিক্ষণ। জেলে এখন সঞ্জয় বলে বেড়াচ্ছে তাকে মিথ্যা ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে। সকালে চা–বিস্কুট, পাউরুটি–কলা দিয়ে দিন শুরু করছে।
সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি হবে কিনা সেটা সময়ই বলবে। তবে আপাতত ধরে নেওয়া হচ্ছে সে আজীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। জেলের ভিতরে কাজ করবে। সেখানেই নিজের জগৎ তৈরি করে নিতে হবে। তাই প্রশিক্ষণ নিতে কোনও অনীহা দেখায়নি সঞ্জয় বলে জেল সূত্রে খবর। খাবারের ক্ষেত্রে পছন্দ–অপছন্দের কথা জানালেও বাকি সময় স্বাভাবিকই থাকছে সঞ্জয়। এমন একটা হাবভাব করছে যাতে মনে হচ্ছে সে কোনও অপরাধই করেনি। প্রশিক্ষণের সময় শেষ হতেই সন্ধ্যায় টিভি দেখতে শুরু করে সঞ্জয়। তবে বেশিরভাগ সময়ই নজর রাখছে সঞ্জয় খবরের চ্যানেলে বলে প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে খবর।