এই সময়, শিলিগুড়ি: স্যালাইন বিভ্রাটের ব্যাপারে জুনিয়র ডাক্তারদের কার্যত ক্লিনচিট দিল রাজ্য সরকার গঠিত কমিটি। উত্তরবঙ্গ সফর শেষে স্টেট লেভেল গ্রিভ্যান্স রিড্রেসাল কমিটির চেয়ারপার্সন সৌরভ দত্ত বলেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের কোনও যোগ পাওয়া যায়নি। এটা সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।’ আরজি কর কেন্দ্রিক আন্দোলনের সময়ে উঠে আসা উত্তরবঙ্গ লবির অস্তিত্ব খারিজ করে দেন তিনি। বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, আধিকারিক এবং ছাত্রদের সঙ্গে এক বৈঠকের পরে তিনি বলেন, ‘রাজ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কোনও দুষ্টু লোককে ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ দেওয়া হবে না।’
গত ২০ জানুয়ারি থাকে স্টেস লেভেল গ্রিভ্যান্স রিড্রেসাল কমিটি উত্তরবঙ্গের মালদা, রায়গঞ্জ, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সফর করে। চিকিৎসক, আধিকারিক এবং ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে তিন সদস্যের কমিটি। প্রত্যেকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ এবং পরামর্শ নথিভুক্ত করে তারা। রাজ্য জুড়েই এই প্রক্রিয়া চলছে। সমস্ত অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসক, আধিকারিক এবং মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকেই প্রত্যেকটি কলেজের অভিযোগ ও পরামর্শ নিয়ে নিয়ে মতামত দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
গোটা রাজ্য জুড়েই চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে চিকিৎসক এবং ছাত্রছাত্রীদের নানা অভিযোগ রয়েছে। সব চাইতে বড় অভিযোগ, তাঁদের কথা শুনতে চাওয়া হয় না। তাঁদের পরামর্শে কেউ কান দেন না। এই অভিযোগ শোনার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কমিটির উত্তরবঙ্গ সফর। গত তিন দিনে উত্তরবঙ্গের মেডিক্যাল কলেজগুলি থেকে নানা অভিযোগ জমা পড়েছে কমিটির কাছে। সব চাইতে বড় অভিযোগ চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ঘিরে। সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ কী ভাবে ছুটি না-নিয়েই কলকাতায় প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন সেই প্রশ্নও উঠেছে। তবে কমিটির চেয়ারপার্সন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ‘এগুলি অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা প্রতিটি বিষয় নথিভুক্ত করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এগুলি পেশ করা হবে।’
আরজি কর কেন্দ্রিক আন্দোলনে প্রশ্ন উঠেছিল পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। এ ব্যাপারে সৌরভ দত্ত বলেন, ‘পরীক্ষা ব্যবস্থা যে ভাবে চলছে, সেটাই চলবে। আরও মসৃণ হবে। মেডিক্যাল পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোনও আপোস করা হবে না। সমস্ত কিছু নিয়মমাফিক চলবে। কাউকে ধরাধরি করতে হবে না। নবান্নের স্বাস্থ্য দপ্তর থেকেই সমস্ত নির্দেশ যাবে। অন্য কোনও জায়গা থেকে যাবে না।’ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি ভবনে বেআইনি ভাবে মেডিক্যাল কাউন্সিলের উত্তরবঙ্গের দপ্তর তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে কমিটির চেয়ারপার্সন বলেন, ‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অফিসের কথা জানি না। অধ্যক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে হবে। যদি এতে ক্ষতি হয়, তা হলে দপ্তর থাকবে না। যদি ভালোর জন্য হয়, তা হলে থাকবে।’