নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উত্তর কলকাতার হেদুয়া পার্কে শুরু হল ২৬তম আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু স্মারক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের আয়োজিত এই মেলায় রোবট থেকে মোবাইল অ্যাপ কিছুরই অভাব নেই। একদল পড়ুয়া শুধু জল আর ফেলে দেওয়া ব্যাটারির সামগ্রী দিয়ে কম দামে রিচার্জেবল ব্যাটারি তৈরি করে ফেলেছে। ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই বিজ্ঞান মেলা। প্রতিদিনই নানা বিষয়ের সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন বিশিষ্ট অধ্যাপক-বিজ্ঞানীরা। বৃহস্পতিবার মেলায় দেখা গেল নারকেলডাঙার দেশবন্ধু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির শুভজিত্ ও নবমের শুভ, অভিজিত্ কয়েকটি জল ভরা কৌটো নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কী তৈরি হয়েছে এটা? ওদের কথায়, ‘এই কৌটোগুলোতে নুন-জল ভরা হয়েছে। দু’টো দণ্ড রয়েছে একটি কার্বন আর অন্যটি জিঙ্কের। এগুলো পুরনো ব্যাটারি থেকে সহজেই পাওয়া যায়। কৌটোর মধ্যে ওগুলোকে দিয়ে আমরা চার্জ করছি।’ বেশ কিছুক্ষণ সেই চার্জ থাকছে বলেই দাবি পড়ুয়াদের। ২ থেকে ৩ ভোল্ট পর্যন্ত শক্তি থাকছে। তবে আগামী দিনে আরও ভালো করার পরিকল্পনা করেছে তাদের। সিঁথির আর বি টি বিদ্যালয়ের একাদশের দুই ছাত্র মস্ত একটা রোবট নিয়ে বসে রয়েছে। কী হবে এটা দিয়ে? ইমন-সন্তুদের বক্তব্য, ‘ওই রোবটের মাধ্যমে চাষের খেতে পরিমিত জল দেওয়া যাবে। তাও একেবারে রিমোট টিপলেই জল বেরবে। এর ফলে জল অপচয় রোধ করা যাবে।’ ফোন থেকে রিমোট চালাতেই রোবটের হাত নড়তে শুরু করল। স্কুল পেরিয়ে যাঁরা কলেজে চলে এসেছেন, সেইসব পড়ুয়ার ঝোঁক আবার অ্যাপ তৈরির ক্ষেত্রে। স্কটিশ চার্চ কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের স্নাতক স্তরের চার ছাত্র শৌর্য, জয়, আয়ুশ ও দেবার্পণ মিলে তৈরি করেছেন অটোনমাস ব্যাঙ্কিং সিস্টেম। ব্লক চেইন পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা একেবারে হাতের মুঠোয় তুলে দেওয়ার পদ্ধতি তৈরি করেছেন তাঁরা। তার সঙ্গে প্রতারক চিহ্নিত করার পদ্ধতিও রয়েছে। এদিন মেলা প্রাঙ্গণে হাজির হয়েছিলেন বিজ্ঞানী পার্থ ঘোষ। তিনি বলছিলেন, ‘মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরি করাই মূল উদ্দেশ্য। এজন্য পড়ুয়াদের স্কুল থেকেই উত্সাহ দেওয়া দরকার।’ বুধবার সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের অধিকর্তা গৌতম ভট্টাচার্য এই মেলা উদ্বোধন করেন। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চর সম্পাদক প্রদীপ মহাপাত্র, মেলা কমিটির চেয়ারম্যান দেবীপ্রসাদ দুয়ারী সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। মেলা কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘মোট ৪২টি স্কুল ও ২২টি কলেজের পড়ুয়ারা নানা ধরনের বিজ্ঞান মডেল নিয়ে হাজির হয়েছেন এই মেলায়। এছাড়া প্রতিদিন কুইজ, সেমিনারসহ নানা অনুষ্ঠান থাকছে।’