• জালিয়াতি রুখতে আধার যাচাই শুধু মুখের ছবি দিয়েই
    বর্তমান | ২৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • বাপ্পাদিত্য রায়চৌধুরী, কলকাতা: সামাজিক পরিষেবা থেকে শুরু করে আর্থিক লেনদেন— আধার নির্ভরতা যত বাড়ছে, তত বেশি করে সামনে আসছে প্রতারণার ঘটনাও। তাই জালিয়াতির হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে এবার পদক্ষেপ নিচ্ছে আধার কর্তৃপক্ষ বা ইউআইডিএআই। আঙুলের ছাপ কিংবা চোখের মণি নয়, আগামী দিনে শুধু ফেস অথেন্টিকেশন বা মুখমণ্ডলের ছবির মাধ্যমেই হবে আধার যাচাই। এব্যাপারেই আরও বেশি করে গুরুত্ব দিতে চাইছে তারা। দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এব্যাপারে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানো শুরু হয়েছে। নতুন করে কোন কোন পরিষেবাকে আধারভিত্তিক করা যায়, তার জন্য দেশজুড়ে ধারাবাহিক আলোচনা পর্ব শুরু করেছে ইউআইডিএআই। তাদের প্রাথমিক টার্গেট সুরক্ষিত লেনদেন। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মুখের ছবির মাধ্যমে আধার যাচাইয়ের পদ্ধতিকে কীভাবে আরও বেশি করে কাজে লাগানো যায়, তার খোঁজ পেতে নন ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থা (এনবিএফসি) এবং আর্থিক লেনদেন সহায়তা প্রদানকারী প্রযুক্তি সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করছে তারা। আলোচনা চলছে টেলিকম সংস্থাগুলির সঙ্গেও। কোন কৌশলে এগলে নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়া সম্ভব, সেব্যাপারে সব মহলের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তাদের কথায়, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণির তুলনায় অনেক বেশি সুরক্ষিত মুখের ছবি। তার মূল কারণ এআইয়ের ব্যবহার। ‘লাইভ’ মুখমণ্ডলের বদলে অন্য কোনও ছবি সামনে এনে, তা দিয়ে আধার যাচাই করা যাবে না।


    বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা মিলিয়ে মোট ৯২টি প্রতিষ্ঠানে আধার যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ফেস অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। স্মার্টফোনে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস প্ল্যাটফর্ম মারফত তা সম্ভব হয়। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে মুখমণ্ডলের ছবি মিলিয়ে আধার যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছিল কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই দেশে এর মাধ্যমে ১০০ কোটি লেনদেন হয়েছে বলে দাবি আধার কর্তৃপক্ষের। তাদের মতে, লেনদেন ৫০ কোটি থেকে ১০০ কোটিতে পৌঁছতে মাত্র ৫ মাস সময় লেগেছে। 


    কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি দিয়ে যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সাফল্যের হার এখনও পর্যন্ত ৮১ শতাংশ। কিন্তু মুখমণ্ডলের ছবির ক্ষেত্রে তা ৮৪ শতাংশ। যদিও কম আলোর মতো প্রাকৃতিক সমস্যার কারণে এই পদ্ধতি সবসময় ব্যবহার করা যায় না। কিছু স্মার্টফোনেও এই সুবিধা নেই। গুগল ও অন্যান্য অ্যাপ সিকিউরিটি সাপোর্ট করে না যে ডিভাইসগুলিতে, সেখানেও ফেস অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা যায় না। তাই ১০০ শতাংশ সাফল্য অধরা। এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। যদিও এভাবে আধার যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সাইবার হানা বা ডিপফেকের ঝুঁকি রয়েছে। মুখের অবয়বের অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে সেই সমস্যা মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য সর্বস্তরে পরামর্শ গ্রহণ চলবে বলে জানাচ্ছেন কর্তারা।
  • Link to this news (বর্তমান)