• সেন্টার খোলা, রোগী দেখা, ওষুধ দেওয়া আয়ুষ কেন্দ্রে ‘একা কুম্ভ’ চিকিৎসকই
    এই সময় | ২৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • দিব্যেন্দু সিনহা, জলপাইগুড়ি

    জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ। এক হাতে সব কাজ। এর ফলে সমস্যায় পড়ছেন আয়ুষ কেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীরা। কয়েকটি কেন্দ্রে চিকিৎসকরা সব কাজ সামলাচ্ছেন। এমনকী সেন্টার খোলা–বন্ধের কাজটাও তাঁদেরই করতে হচ্ছে।

    আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি হোমিওপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদ অর্থাৎ আয়ুষ চিকিৎসার উপরেও সাধারণ মানুষের ভরসা অনেক বেড়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের বক্তব্য, লাগাতার প্রচার এবং প্রসারে গত তিন বছরে জলপাইগুড়ি জেলার ২৭টি আয়ুষ সেন্টারে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৬০ শতাংশ।

    যে কারণে সেন্টারগুলিও ঢেলে সাজানোয় খামতি রাখা হচ্ছে না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ফাঁকফোকর থেকে যাচ্ছে। পরিকাঠামোর সমস্যা নেই। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাবে সঙ্কটে জেলার আয়ুষ কেন্দ্রগুলি। একইসঙ্গে ঘাটতি রয়েছে ফার্মাসিস্ট ও গ্রুপ ‘ডি’ কর্মীর। এর ফলে পরিষেবা চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। তাই চিকিৎসকরাই কর্মীদের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি তুলছেন।

    ২৭টি সেন্টারের মধ্যে আটটি আয়ুর্বেদের, বাকিগুলি হোমিওপ্যাথি। সমস্ত সেন্টারে একজন করে চিকিৎসক আছে। হোমিওপ্যাথির কেন্দ্রগুলির মধ্যে আটটি সেন্টারে ফার্মাসিস্ট থাকলেও বাকিগুলিতে নেই।ফলে চিকিৎসকদেরই ওষুধ তৈরি করে দিতে হয়। অনেক হোমিওপ্যাথি কেন্দ্রে গ্রুপ ‘ডি’ কর্মী নেই। ফলে রোগীদের পরিষেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। জলপাইগুড়ির বেলাকোবা হোমিওপ্যাথি সেন্টারে চিকিৎসা করাতে এসে দাঁড়িয়েছিলেন সুধীর সরকার। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসককেই ওষুধ দিতে হচ্ছে। এর ফলে এক–একজন রোগীর পিছনে অনেকটা সময় চলে যাচ্ছে। ফার্মাসিস্ট থাকলে এ সমস্যা হতো না। রোগীদেরও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হতো না ডাক্তার দেখানোর জন্য।’

    সরকারি নির্দেশ অনুসারে আয়ুষ সেন্টারগুলিতে হার্বাল গার্ডেন তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছ’টি সেন্টারকে মডেল সেন্টার করার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি সেন্টারে কর্মী নিয়োগ না–হওয়া পর্যন্ত সমস্যা মেটার সম্ভাবনা নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি হাসপাতালের একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বলেন, ‘সাধারণ মানুষ আয়ুষ চিকিৎসা পদ্ধতির উপর ভরসা রাখতে শুরু করেছেন। আমাদের সেন্টারে রোগীর সংখ্যাও অনেক। কিন্তু, নেই গ্রুপ ‘ডি’ কর্মী এবং ফার্মাসিস্ট। এই কারণে সেন্টার খোলা, রোগী দেখা, ওষুধ দেওয়া— সবই আমাকে করতে হয়।’

    এই সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন আয়ুষের জেলা মেডিক্যাল অফিসার কল্যাণ মুখোপাধ্যায়। বলেন, ‘আয়ুষ চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে লাগাতার প্রচারে সাধারণ মানুষ এখন এতে আস্থা রাখছেন। সেন্টারগুলিতে রোগীর ভিড় দেখা যাচ্ছে। পরিকাঠামোর সমস্যা নেই। পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মী না থাকায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিষয়টি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)