• গ্রামে হিংস্র কুকুরের দল, হামলায় মৃত ২৫ ছাগল
    এই সময় | ২৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, কাটোয়া

    পথকুকুরের হিংস্র আচরণ ফের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কাটোয়ায়। গত ক’দিনে কাটোয়া থানা এলাকার দাঁইহাট শহরের দু’টি ওয়ার্ডে হিংস্র কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছে একাধিক ছাগল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ দিনে ২৫টিরও বেশি ছাগলের ওপর হামলা চালিয়েছে কুকুরের দল। কুকুরের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ৮টি ছাগলের৷ ছাগলছানা দেখলে মুখে তুলে নিয়েও যাচ্ছে কুকুর। এমনকী ছাগলের মাথা কামড়ে ছিঁড়ে নিয়ে গিয়েছে কুকুর বলেও দাবি স্থানীয়দের৷ আপাতত ছাগল বাঁচাতে নেট দিয়ে এলাকা ঘিরে পাহারা দিচ্ছেন বাসিন্দারা৷

    ২০১৮ সালে এমনই ঘটনা ঘটেছিল কাটোয়ার বাঁদরা গ্রামে। সেই সময়ে পাড়ার কুকুরের দল একজোট হয়ে হামলা চালিয়েছিল পোষা ভেড়ার উপরে। মাসখানেক ধরে চলেছিল সেই অত্যাচার। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসী তখন কয়েকটি কুকুরকে পিটিয়ে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এখন দাঁইহাট, চর পাতাইহাট, পাতাইহাটের বাসিন্দাদের মধ্যে কুকুর নিয়ে ফের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা। আমরা এটা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব। প্রয়োজনে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের সঙ্গেও কথা বলব৷’

    দাঁইহাট শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পাতাইহাট ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চর পাতাইহাট এলাকা দু’টিতেই এমন ঘটনা শুরু হয়েছে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মূলত দুপুর ও স‍ন্ধ্যায় কুকুরগুলি একসঙ্গে আক্রমণ করছে। ওই সময়ে এলাকা ফাঁকা থাকে। আর সেই সুযোগই নিচ্ছে কুকুরগুলি৷ পাতাইহাটের বাসিন্দা গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের পাড়াতেই এক মাসে ৬টি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে৷ কুকুরগুলি মাংস খাচ্ছে না, গলার নলিটা কামড়ে মেরে দিয়ে পালাচ্ছে৷ আবার মাথাও কামড়ে ছিঁড়ে দিচ্ছে৷’

    চর পাতাইহাটের বাসিন্দা অরুণ ভক্তের কথায়, ‘আমারই দু’টি ছাগল মরেছে কুকুরের আক্রমণে৷ আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি৷’ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আশুতোষ রায় জানাচ্ছেন, কুকুরের আক্রমণ ঠেকাতে তিনি তাঁর বাড়ির চারপাশ নেট দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। সেই নেটের ভিতরে রেখেছেন ছাগলগুলিকে৷’ সমীর বিশ্বাস নামে আর এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁরও একটি ছাগল মারা পড়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই কুকুরগুলি যখন আসছে, তখন পাড়ার কুকুর ভয়ে পালাচ্ছে৷

    রয়্যাল কলেজ অফ বায়োলজির ফেলো ও পথকুকুর নিয়ে গবেষণা করা সুনীল পাল বলেন, ‘কুকুর সাধারণত প্রভূভক্ত হয়৷ ওরা মানুষের কাছাকাছিই থাকে৷ তবে আর এক ধরনের কুকুর থাকে, যারা বহু দিন ধরে নদীর চর লাগোয়া এলাকায় থাকে৷ এদের ফেরাল কুকুর বলা হয়৷ নদীতে ভেসে আসা মৃত জীবজন্তুই এদের মূল খাবার৷ এরা কুকুর সমাজে থাকে না৷ এরাই হয়তো খাবার না পেয়ে লোকালয়ে এসে ছাগলগুলিকে কামড়ে দিচ্ছে৷ মরা ছাগলগুলিকে চরে ফেলে দিলে এরা তখন সেটাই খাবে।’

  • Link to this news (এই সময়)