এই সময়, আসানসোল: রাজ্যের আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়িতে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ধৃত যুবক ভিকি কেওড়াকে বৃহস্পতিবার আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করে দক্ষিণ থানার পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ভাঙচুর, সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়ার মতো ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বিচারক ধৃতের ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
হামলার পর এ দিন সকালে নিজের বাড়িতে আসেন মলয়। তিনি বলেন, ‘বুধবার ঘটনার সময়ে বাড়িতে ছিলাম না। খবর পাই, এক যুবক আমার ঘরে ঢুকে ইট নিয়ে হামলা চালিয়ে টেবিলের কাচ ভেঙেছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশি তদন্তে আমার আস্থা রয়েছে। তারা কারণ খুঁজে বার করবে বলে আমার আশা।’ পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী বলেন, ‘এখনই তা বলা যাবে না। থাকলেও থাকতে পারে।’
পুলিশ জানিয়েছে, মন্ত্রীর আসানসোলের আপকার গার্ডেনের বাড়ির নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। ডিসি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস বলেন, ‘হামলার সময়ে মলয় ঘটকের বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চার পুলিশকর্মীকে বদলি করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। বৃহস্পতিবার সকালেই মন্ত্রীর বাড়িতে চার জন নতুন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।’
হামলার সময়ে মলয় তাঁর আসানসোলের বাড়িতে ছিলেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জেলা সফরে আলিপুরদুয়ারে গিয়েছিলেন তিনি। নিরাপত্তা নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকরা কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে। তার পরেই মন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ দিন ধৃত যুবকের মা মুক্তি কেওড়া জানান, ভিকি তাঁর বড় ছেলে। তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করতেন। কিছু দিন আগে তিনি মারা যান। এর পরেই চাকরির খোঁজ শুরু করেন ভিকি। মুক্তি বলেন, ‘ছেলের মাথা কাজ করছে না। ঘরেরও বহু জিনিস নষ্ট করে দিয়েছে। এই সব কারণে ছেলের স্ত্রী আগেই ছেড়ে চলে গিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় শুনি, ছেলে এই কাণ্ড বাধিয়েছে।’
ভিকির মাসি মালতি তুরির কথায়, ‘দু’মাস হলো আমরা ওর চিকিৎসার চেষ্টা করছি। একটা মরা কুকুরকে পুড়িয়ে নিজের মাথা ন্যাড়া করে। বুধবার এলাকায় নাচানাচি করে বিকেলে বেরিয়ে যায়। তার পর এই ঘটনা।’ স্থানীয়দের বক্তব্য, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ভিকিকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর আচরণ ও কথায় অসঙ্গতি লক্ষ করা গিয়েছিল।