অরূপ বসাক: খাদ্যের লোভে জনবসতি এলাকায় হাতির হামলা, এমন ঘটনার খবর পাওয়া এখন নতুন নয়। এবার এই ঘটনারই শিকার মালবাজার মহকুমা এলাকার মানুষজন। এলাকা জুড়ে ক্রমাগত বাড়ছে হাতির হামলা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মালবাজার মহকুমার চালসা থেকে নাগ্রাকাটা যাবার রাস্তায় সঙ্কর প্রধান কলনী হাতির হামলায় চারটি ঘর মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে একটি হাতি। এর আগেও দেখা গেছে মালবাজারে বারংবার হাতির উৎপাত। সেখানকার মানুষজনদের দাবি বনের মধ্যে খাদ্যের অভাবে এলাকায় এসে হামলা চালাচ্ছে হাতিরা এবং এরফলেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা।
হাতি একে একে চারটি ঘরের দেওয়াল ভেঙ্গে খেয়ে নেয় চাল, আটা, ডাল, সবজিসহ সমস্ত জিনিস, এমনই দাবি বাড়ির মালিক অমল মিঞ্জ -এর। তিনি বলেন, 'তখন গভীর রাত, আমরা সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। একটি দাঁতাল হাতি খাবারের খোঁজে এসে একে একে চারটি ঘরে দেওয়াল ভেঙ্গে সব কিছু খেয়ে নেয়। ভয়ে বাড়ির লোকজন কোন ক্রমে পালিয়ে বাঁচি। এই দৃশ্য দেখে আমার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে।' সেখানকার মানুষেরা দাবি করেছেন বারংবারই দাঁতালের দল ঢুকছেন এলাকায় এবং উতক্ত করে তুলছে জনজীবনকে। খাবারের খোঁজে আসা দাঁতাল হাতির হামলায় এলাকার মানুষেরা অত্যন্ত ভীত ও সন্ত্রস্ত। তাদের দাবি এই দাঁতালদের আক্রমণে মানুষদের ক্ষতি অবধি হতে পারতো। এখনও অবধি অমল মিঞ্জ -এর পরিবার অত্যন্ত ভীত, তাঁদের মন থেকে কাটছেনা তাঁদের বাড়ির ওপর দাঁতালের আক্রমণের ঘটনা।
অরণ্যের আয়তন হ্রাস, জঙ্গলে খাদ্যাভাব, জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বসতি স্থাপন ও চাষাবাদের জেরে বদলাচ্ছে হাতিদের খাদ্যাভ্যাস। এই কারণেই বিভিন্ন এলাকায় হাতির দলের হামলা লেগেই চলেছে। ইদানিং এলাকায় ঢুকে হাতির দলের হামলা ব্যস্ত করে তুলেছে জনজীবনকে। পরিবেশপ্রেমীরা মনে করছে হাতির খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনই মূলত তাদের এলাকায় আসার কারণ। জঙ্গলে যে সব খাবার প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়, তার তুলনায় অধিক পুষ্টিকর ও ক্যালোরি যুক্ত খাবার সহজে লাভ করার লোভেই হাতির দল এখন লোকালয়ে হানা দিচ্ছে অহরহ।
মাটিয়ালী বাতাবারি এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ইগ্নতিষ তিজ্ঞা বলেন, হাতির হামলার খবর পেয়ে রাতেই বন কর্মিরা এসে হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরায়। ক্ষতিপূরণ এর আস্বাস দিয়েছে বন দপ্তর। সম্ভবত পানঝোড়া জঙ্গল থেকে হাতিটি জনবসতি এলাকায় এসেছিল। জনবহুল এলাকায় এই ভাবে হাতির হামলায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষরা। এলাকার মানুষদের থেকে জানা যাচ্ছে হাতিটি ঘরের জিনিসপত্রও নষ্ট করেছে প্রচুর। এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান বলেছেন এই পরিবারটি যাতে সরকারি সাহায্য পায় সেই দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।