রক্তিমা দাস: সম্পূর্ণ বাড়ি তৈরি হয়ে যাওয়ার আগেই বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিতে হবে। সম্প্রতি শহরে একের পর এক বিপজ্জনক ভাবে বাড়ি হেলে পড়ায় নয়া সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। মূলত দুই ধাপে কাজ হবে, প্রথম ধাপে এলাকা পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করবেন ইঞ্জিনিয়াররা, দ্বিতীয় ধাপের সারা দিনে পাওয়া সমস্ত তথ্য রিপোর্ট করবেন তারা। যদি কোনও কনস্ট্রাকশনের সঠিক নথি না থাকে তাহলে সেই বাড়ির ছবি তুলে দিতে হবে পুরসভার কর্মচারীদের জন্য তৈরি নির্দিষ্ট অ্যাপসে।
সেই রিপোর্ট পাওয়া মাত্রই পদক্ষেপ নেবেন ডিরেক্টর জেনারেল। সম্পূর্ণ বাড়ি তৈরির আগেই ভেঙে ফেলতে হবে নির্মীয়মান অংশ। যদি এরপরেও দেখা যায় বেআইনিভাবে কোনও বাড়ি তৈরি হয়ে গেল অথচ কলকাতা পুরসভা জানতে পারল না, সেক্ষেত্রে দায়িত্বহীন ইঞ্জিনিয়ারদের সরাসরি সাসপেন্ড করা হতে পারে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে কলকাতায় বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৪৬টি। এর মধ্যে উত্তর ও মধ্য কলকাতায় দেড় থেকে ২ হাজার বাড়িই বিপজ্জনক। তালিকাভুক্ত হাই রিস্ক জোন বাড়ি প্রায় ৩০%। যার মধ্যে ১০ শতাংশ বাড়ি সিভিয়ার রিস্ক জোনে রয়েছে। ১০০ টি বাড়ি অতি বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা মধ্য কলকাতায়। উত্তর কলকাতার ৪ ও ৫ বোরোয় সর্বাধিক বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। এছাড়া শহরে ৩০ টি বাড়ি হেলে রয়েছে বলে খবর কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে। গত ৫ বছরে গোটা শহর জুড়ে মাত্র ৭০ টি বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কারের কাজ সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, কলকাতায় হেলে পড়ছে একের পর বহুতল। ২৩ জানুয়ারি সকালেই ট্যাংরায় হেলে পড়ে নির্মীয়মাণ চারতলা ফ্ল্যাট। কলকাতা পুরসভার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১১/২ ক্রিস্টোফার রোডের এই হেলে পড়া বাড়ির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কলকাতার পাশাপাশি হেলে পড়ার ঘটনা নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে সেই একই ছবি দেখা গেল হাওড়ার শরৎ চ্যাটার্জি রোডে। সেখানে একে অপরের দিকে হেলে রয়েছে জোড়া ফ্ল্যাটবাড়ি। শুধু তা-ই নয়, বাড়ি দু’টির উপরের অংশ ঠেকেও গিয়েছে।