• সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি
    আজকাল | ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • মিল্টন সেন: "আর জি কর মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়ের অপরাধ বিরলের মধ্যে বিরল তম নয়। তাই তার সর্বচ্চ শাস্তি হয়নি। অথচ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বলেছিলেন, এটা নজিরবিহীন ঘটনা। তাহলে কোনটা বিরল ঘটনা?" প্রশ্ন আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির।

    বৃহস্পতিবার রাতে চুঁচুড়ায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শ্রীরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি বলেছেন, "আর জি কর মামলার শাস্তি ঠিক হল না। শাস্তিটা যাবজ্জীবনের জায়গায়, ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল।' সংসদের প্রশ্ন 'কেনও বিচারক বললেন, এটা বিরলতম ঘটনা নয় সেটা আমি আজও বুঝতে পারলাম না।তাহলে বিরল থেকে বিরলতম ঘটনাটা কি? তাহলে কোন কোন ঘটনাগুলো বিরল থেকে বিরতম হবে। একজন ডাক্তার মহিলাকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। সেটা সাধারণ খুন নয়। কত চোট পেয়েছে। তাহলে, ধনঞ্জয়ের মামলাটা কি ছিল? সেটা বিরল থেকে বিরতম হল কি করে?"

    কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির কথা উল্লেখ করে সাংসদ বলেন, "সব থেকে বড় কথা কলকাতা হাইকোর্টের একজন মাননীয় বিচারপতি যখন ডাক্তাররা মিটিং মিছিল করবে তার পারমিশন দিতে গিয়ে নির্দেশে বলেছিলেন এটা নজিরবিহীন ঘটনা। হাইকোর্টের জাজ বলছেন ইট ইজ আনপ্রেসিডেন্সিয়াল ইনসিডেন্ট। এবং সেটা দেশের মধ্যে। আর এখানে বিচারক বলছেন এটা বিরল থেকে বিরলতম নয়। দুটটোর মধ্যে আমি তফাৎ দেখতে পাচ্ছি।" 

    কল্যাণ ব্যানার্জি আরও বলেছেন, 'দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য হাইকোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানেও বিরোধিতা করছে কে? সিবিআই। ভাবুন একবার, কেন? তাহলে কি সর্বোচ্চ সাজা তোমরা চাইছ না? যদি চাও তাহলে, তোমার চাওয়া আর আমার চাওয়া যদি এক হয় তাহলে তুমি আমার বিরোধিতা করবে কেনও? শুধু মাত্র রাজনীতি করার জন্য। সোসাইটি রাজ্যের মাধ্যম দিয়ে কথা বলে। শাস্তি দেওয়া হয় কেনও? সোসাইটি কে শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে। সোসাইটি পশ্চিমবঙ্গের সোসাইটি, সিবিআইএর সোসাইটি নয়। সোসাইটির মানুষের কথা বলে রাজ্য। তার বিরোধিতা করছেন।"

    নিম্ন আদালতের নির্দেশ নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হতাশার কথা জানিয়েছিলেন। সেই কথা তুলে ঘরে তৃণমূল সাংসদ বলেন, "আমাদের মুখ্যমন্ত্রী প্রথম দিন থেকেই বলেছিলেন জাস্টিস ফর আরজি কর এবং অপরাধীর ফাঁসি চাই। আরজি করের ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় অপরাজিতা বিল নিয়ে এলেন। সেই অপরাজিতা বিলে পরিষ্কার করে বলা হল, যদি কোনও মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। তার একমাত্র শাস্তি হবে ফাঁসি। এই বিল অনুমোদনের জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেটা এখনও আটকে রয়েছে। তাহলে কি, কেন্দ্রীয় সরকার চাইছেন না কড়া সাস্তি। কোনও মহিলা ধর্ষিতা হয়ে খুন হলে, তার ফাঁসি হবে না। এটাই তাহলে কেন্দ্র সরকারের বক্তব্য। আমরা পরিষ্কার উত্তর চাই।"

    কেন্দ্রের প্রতি সাংসদের প্রশ্ন, "আপনারা নতুন আইন নিয়ে এলেন। সেখানে তো প্রেসক্রাইব করলেন না। মহিলারা কেনও অত্যাচারিত হবে। আর যদি হয়ে থাকে তার পানিশমেন্ট কেনও হবে না? কিন্তু কেন্দ্র সরকারের সিবিআইয়ের অসৎ উদ্দেশ্য প্রমাণিত।' কল্যাণ বাবু বলেন, "আমি শুনলাম সিপিএমের একজন রাজ্যসভার সাংসদ বলেছেন, তিনি ফাঁসি সাজার বিরুদ্ধে। ভাল কথা। আজকে মুখ খুললেন কেনও। ধনঞ্জয়ের যখন ফাঁসি হয়েছিল তখন কেনও বললেন না যে আমি ডেথ পেনাল্টির বিরুদ্ধে। ও বাঁকুড়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের গরিব ছেলে বলে। বাহ, কি নীতি আদর্শ আপনাদের। পরিষ্কারভাবে সিপিএম পার্টি থেকে বলুন, মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন করলে কোন ডেথ পেনাল্টি আমরা দাবি করব না। ঘোমটার নিচে নাচবেন না।" 

    মহিলাদের শিক্ষিত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর উপদেশ দেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। বলেন, মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারলে তবেই মেয়েদের উপর অত্যাচার কমবে।
  • Link to this news (আজকাল)