শ্রীকান্ত ঠাকুর: এবার সরকারি আইটিআই কলেজের গুণধর শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা, গভীর রাতে ফোন করা, এমনকি অশ্লীল মেসেজ পাঠানোর অভিযোগের সরব হল খোদ ছাত্রছাত্রীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারী ব্লকের গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজে মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষক জালাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা এবং অশ্লীল মেসেজ পাঠানো এবং তাদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলে শুক্রবার কলেজের অধ্যক্ষের কাছে এবং বংশীহারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সমবেতভাবে বিক্ষোভ দেখায় অভিযুক্ত শিক্ষককে কলেজ থেকে বরখাস্তের দাবিতেও।
কলেজের অধ্যক্ষ সোমনাথ পাত্র আশ্বাস দিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার সূত্রপাত ১ জানুয়ারি থেকে। প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া এক ছাত্রীর ভর্তির পর থেকে। অভিযোগ, অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন আহমেদ গভীর রাতে ওই ছাত্রীকে ফোন করতে থাকেন। প্রতিবারই ফোন করেছেন হোয়াটসঅ্যাপে যাতে করে কল রেকর্ড করা না যায়। ছাত্রী এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বেশ কয়েকবার। তারপরেও নানারকমভাবে ওই শিক্ষক উত্যকেত করেছেন বলে অভিযোগ। শুধু প্রথম বর্ষের এই ছাত্রী নয়, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এর আগেও তিনি বেশ কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন এবং তাদেরকেও একইরকমভাবে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়েছেন। কুপ্রস্তাবও দিয়েছেন। কিন্তু কোনও সময়ই কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
অবশেষে এদিন দুপুরে ছাত্রছাত্রীরা একযোগে বংশীহারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সমবেত বাধা এবং বিক্ষোভের জেরে কলেজের অধ্যক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সরকারি আইটিআই কলেজে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থানীয়ভাবে করা হয় না। তাই অধ্যক্ষের দাবি, ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ পাওয়ার পর প্রথম দিন-ই তিনি উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছেন। তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কারিগরি শিক্ষা দফতর।
ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষককে যত দ্রুত সম্ভব বরখাস্ত করতে হবে। কলেজে কোনওভাবেই তারা আর এই শিক্ষকের ক্লাস করতে চায় না। ওদিকে মূল অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন আহমেদ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, যা হয়েছে, তার থেকে অতিরঞ্জিত করে ছাত্র-ছাত্রীরা বলছে। এমন কিছু ঘটনা ঘটেনি। যাতে তাঁর বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ ওঠে। তিনি সকলেরই ভালো চান। সেই কারণেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।