• এবার বারিকুলে মিলল রয়্যাল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ, আতঙ্ক
    বর্তমান | ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায়, বাঁকুড়া: ফের দক্ষিণ বাঁকুড়ায় বাঘের আতঙ্ক ছড়াল। শুক্রবার সকালে বারিকুলে পায়ের ছাপ মেলে। এদিন বারিকুল থানার জঙ্গলঘেরা বাগডুবি গ্রামের বাসিন্দারা ওই পায়ের ছাপ দেখতে পান। তাঁরা দাবি করেন পায়ের ছাপ বাঘেরই। সেই খবর চাউর হতেই বনদপ্তরের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। বনকর্মীরা পায়ের ছাপ বাঘের কি না তা পরীক্ষা করেন। স্কেল দিয়ে ছাপের দৈর্ঘ্য মাপা হয়। পরে বনদপ্তরের তরফেও নিশ্চিত করা হয় ওই পায়ের ছাপ বাঘেরই। জিনাতের পর যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি পুরুলিয়ায় ছিল, এই পায়ের ছাপ তারই বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। বিষয়টি নিয়ে পুলিসও সতর্ক হয়েছে। বারিকুল থানার সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিসি টহল বাড়ানো হয়েছে বলে খাতড়া মহকুমার এক পুলিস আধিকারিক জানিয়েছেন। 


    মুখ্য বনপাল(কেন্দ্রীয় চক্র) এস কুলান ডাইভাল বলেন, পায়ের ছাপ বাঘেরই। সম্ভবত যে বাঘটি পুরুলিয়ায় ছিল, সেটি ঝাড়গ্রাম হয়ে বারিকুলে ঢোকে। আপাতত সেটা ঝাড়গ্রামের বাঁশপাহাড়ীর জঙ্গলে রয়েছে।


    প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বরের শেষেই পুরুলিয়া বন্দোয়ানের রাইকা পাহাড়, ভাঁড়ারিয়া পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছিল জিনাত। বেশ কয়েকদিন সে বনকর্তাদের নাকানিচোবানি খাওয়ায়। আতঙ্কে ছিলেন বাসিন্দারা। শেষমেশ বাঁকুড়ার রানিবাঁধের গোঁসাইডি জঙ্গলে জিনাতকে ধরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন বনকর্তারা। কিন্তু, কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের আরও একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হাজির হয়। পুরুলিয়ার ভাঁড়ারিয়ার জঙ্গলেই সে বেশ কয়েকদিন আশ্রয় নেয়। তারপর বনকর্তারা জানান বাঘটি ঝাড়খণ্ডে ফিরে গিয়েছে। কিন্তু, এদিন ফের বাঘের পায়ের ছাপ মিলতেই বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন। 


    বাগডুবির বাসিন্দা উকিলচন্দ্র মাণ্ডি, সায়রী মাণ্ডি বলেন, আমাদের গ্রামটি জঙ্গলের মধ্যে। এদিন সকালে গ্রাম লাগোয়া রাস্তায় বড় বড় পায়ের ছাপ লক্ষ্য করি। ওই ছাপ বাঘের পায়ের বলেই আমরা মনে করছি। কারণ জঙ্গলে হায়না, নেকড়ে সহ অন্যান্য জীবজন্তু চলাফেরা করে। তাদের পায়ের ছাপের সঙ্গে আমরা মোটামুটি পরিচিত। এত বড় পায়ের ছাপ এই প্রথম আমরা দেখলাম। বাঘটি পুরুলিয়ার দিক থেকে এসে এলাকায় ফের ঘোরাফেরা করে ওই জেলার দিকেই ফিরে গিয়েছে। গৃহপালিত পশু নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা কীভাবে গ্রামে বাস করব, তা নিয়েও চিন্তিত। 


    স্থানীয় বাসিন্দা নির্মাল সোরেন বলেন, এলাকার একটি কালভার্টের কাছে বাঘটি বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করেছে। সেখানে একাধিক পায়ের ছাপ লক্ষ্য করেছি। ওই রাস্তা দিয়ে অনেকে যাতায়াত করেন। ভয়ে এদিন ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারেনি। প্রাইভেট টিউশনি পড়তে যাওয়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এদিন সকালে কেউ জঙ্গল লাগোয়া মাঠে গোরু, ছাগল চরাতে নিয়ে যায়নি। বনকর্মীরা এলাকায় ঘুরে গিয়েছে। তবে আতঙ্ক বাসিন্দাদের পিছু ছাড়ছে না। রাতে আমরা ঘুমাতে পারব না। খাতড়া মহকুমার এক পুলিস আধিকারিক বলেন, বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর জঙ্গলঘেরা গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বেরতে নিষেধ করা হচ্ছে। এলাকায় পুলিসি টহল বাড়ানো হয়েছে। - ছবি: ভৈরব দাস             
  • Link to this news (বর্তমান)