• বিশ্বকাপ জিতে ফিরলেন খো খো দলের সুমন, তীব্র অনটনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
    বর্তমান | ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ঘরে ফিরল বিশ্বকাপজয়ী ছেলে। শুভেচ্ছার বন্যা, জাতীয় সঙ্গীতের সুর, আর নাগরিক উন্মাদনা সঙ্গে নিয়ে হুডখোলা টোটোতে ফিরলেন সুমন বর্মণ। তিনি হুগলির ভূমিপুত্র। খো খো বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের একমাত্র বাঙালি সদস্য। দিল্লিতে ফাইনাল খেলার দিন মাঠে সিংহের মতো বিচরণ করছিলেন এই কিশোর। সকালে চুঁচুড়া স্টেশনে লোকাল ট্রেন থেকে নামেন বিশ্বজয়ী এই খেলোয়াড়। তারপর নাগরিকরা উচ্ছ্বাস দেখান। দিনমজুর পরিবারের ছেলের মুখে তখন তৃপ্তির হাসি।


    চুঁচুড়ার মিলনপল্লিতে সুমনের বাড়ির সামনে ছিল ভিড়। বিশ্বকাপজয়ীকে দেখতে চেয়েছেন সবাই। সুমনের দাদা সঞ্জু বর্মণ ছিলেন এই পরিবারের প্রথম খো খো খেলোয়াড়। প্রতিভাবান সঞ্জুকে ময়দান ছাড়তে হয়েছিল কথা বলার সমস্যার কারণে। দাদার পথ ধরে মাঠে নেমেছিলেন সুমন। সঙ্গে তাঁর বোন রিয়াও। দশম শ্রেণির ছাত্রী রিয়াও বাংলা খো খো দলের নিয়মিত খেলোয়াড়। দাদার সাফল্যে বোনের চোখে এদিন জল। বছর উনিশের সুমনের দাদার মুখ উজ্জ্বল। সুমন বলেন, ‘বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য হতে পারা সবসময় গর্বের। তবে বাড়িতে দু’জন সক্রিয় খো খো খেলোয়াড়। অথচ আর্থিক অনটনে পুষ্টিকর খাবার থেকে অনুশীলনের সুযোগ, সবই কম। এভাবে কতদিন টানতে পারব, জানি না। বোনের কথা ভেবেও খারাপ লাগে।’ জনতার বিপুল ভিড়ের মধ্যে গর্বিত মুখে দাঁড়িয়ে বাবা রামদেব বর্মণ আর মা সুজাতাদেবী। তাঁদের একজন দিনমজুর ও অন্যজন পরিচারিকার কাজ করেন। রামদেব বলেন, ‘খুব সামান্য সাধ্য আমাদের। ছেলের জন্য গর্ব হচ্ছে। সঙ্গে হতাশও লাগছে।’ পাশে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছিলেন সুজাতা। এদিনের সুমনের বাড়িতে এসেছিলেন প্রশিক্ষক কৃষ্ণরঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘সুমনের সরকারি সাহায্য খুব দরকার। নইলে অকালে একটি প্রতিভা ঝরে যেতে পারে।’ প্রসঙ্গত এবারই প্রথম ভারতে বসেছিল খো খো বিশ্বকাপের আসর। পুরুষ ও মহিলা, দুই ভারতীয় দলই বিশ্বকাপ জিতেছে। সেই খেলার আসরে যোগ দিয়েছিলেন হুগলির দুই রেফারি। এবার হুগলি পেল বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়ও।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)