• ব্যস্ত দিনে সেতুতে কাজ, হেঁটেই পারাপার নিত্যযাত্রীদের
    এই সময় | ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, বালি: একশো ঘণ্টার রেল বন্ধের কারণে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবন। কর্মব্যস্ত দিনে রেল পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় নাজেহাল নিত্যযাত্রীরা। বৃহস্পতিবার ছিল ছুটির দিন। শুক্রবার কাজের দিনে বাড়ি থেকে বেরিয়েই নাকাল যাত্রীরা। রাজপথ–ই তাঁদের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে। কিন্তু সেখানেও স্বস্তি নেই।

    শিয়ালদহ–ডানকুনি রেলপথে একশো ঘণ্টা পাওয়ার ব্লকের দ্বিতীয় দিনে অফিসের সময় বালি ব্রিজ ও সংলগ্ন সবকটি রাস্তায় উপচে পড়েছে যাত্রী–সহ যানবাহনের ভিড়। ২৩ জানুয়ারি নেতাজি জন্মজয়ন্তী হওয়ায় রেল বন্ধের প্রথম ৩০ ঘন্টায় টের পাওয়া যায়নি যাত্রী–চাপ।

    শুক্রবার সকাল থেকেই রাস্তায় যাত্রীদের ঢল নেমেছে। একই সঙ্গে অসংখ্য বাইক, স্কুটি, শাটল গাড়ি, বাস, ট্যাক্সির ভিড়ে অবরুদ্ধ বালি ব্রিজের একদিক–সহ সংলগ্ন সবকটি রাস্তা। এক সময় যানজট বালি হল্ট স্টপেজও ছাড়িয়ে যায়।

    অন্য দিকে, বালি খাল হয়ে জিটি রোডে উত্তরপাড়া সেতু, বালির দিকের জিটি রোড অবরুদ্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ যানজটে ফেঁসে গিয়ে নাকাল হন অসংখ্য অফিস যাত্রী, ছাত্রছাত্রী–সহ অন্যরা। একটা সময় দেখা যায়, গাড়ি থেকে নেমে পিলপিল করে নিত্যযাত্রীরা বালি ব্রিজের ফুটপাথ ধরে দক্ষিণেশ্বরে দিকে হেঁটে চলেছেন।

    সেখান থেকে মেট্রো ধরে গন্তব্যে পৌঁছতে চান সকলে। প্রবল যানজটে থমকে যায় বালি থেকে দক্ষিণেশ্বরমুখী ব্রিজের রাস্তাও। সকাল ৮টা থেকে ব্রিজে বালির দিক থেকে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যান চলাচল শুরু হলেও দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের কাছে রেলব্রিজের নীচে একটি ট্রেলার খারাপ হয়ে সেই রাস্তা সম্পূর্ণ আটকে যায়।

    আগের রাতে দক্ষিণেশ্বরের সেই জায়গাতেই রাস্তার ওপর শিয়ালদহ–ডানকুনি রেলপথের রেল ব্রিজের গার্ডার পরিবর্তনের জন্য রাতভর কাজ চলেছে। সেই কাজ শেষ হতে সকাল হয়ে যায়। অবশেষে হাওড়া সিটি পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যারাকপুর সিটি পুলিশ ও রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে রেলের কাজ বন্ধ রেখে রাস্তা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর পরেই রেলের যন্ত্রবহনকারী ওই ট্রেলার বিকল হয়ে যাওয়ায় বিপত্তি আরও বেড়ে যায়। অবশেষে পুলিশের উদ্যোগে ওই পথ স্বাভাবিক করতে বেলা ১০টা বেজে যায়। এর পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় বালি ব্রিজ থেকে দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তায় যান চলাচল।

    এ দিকে, এ দিন উল্টোপথে নিবেদিতা সেতু টোলওয়ে রোডে বালিহল্ট স্টেশনের কাছেও অসংখ্য বাসযাত্রী নামাওঠা করায় প্রবল ভিড় হয়। দিনভর প্রবল যানজট ছিল নিবেদিতা সেতুর একদিকেও। সেতুর বালির দিক থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের দিকে যাওয়ার পথে টোলপ্লাজার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রবল যানজট। দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতু টোলওয়ে কোম্পানি সূত্রে জানা গিয়েছে, একদিকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একটি রাস্তা বন্ধ থাকায় ও নো–এন্ট্রি থাকায় সেতুতে মালবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যায়, যাতে যানজট তৈরি হয়। দীর্ঘক্ষণ ট্রেন বন্ধ থাকায় নিত্যযাত্রীরা বাসে যাতায়াত করতে বাধ্য হয়েছেন।

    বেলার দিকে অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। এ দিন পূর্বরেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ দেউস্কর–সহ পদস্থ আধিকারিকরা বালি ব্রিজের গার্ডার পরিবর্তনের কাজ পরিদর্শন করেন। কাজ দেখার পরে জিএম বলেন, ‘কাজ খুব সুন্দর ভাবে হচ্ছে। গত পাঁচ বছর ধরে আমরা এই কাজ করে চলেছি। চূড়ান্ত পর্বে এখন চারদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়েছে। আমরা জানি, যাত্রীদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। তবু ভবিষ্যতের নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁরা এটুকু মানিয়ে নেবেন বলে আশা রাখি।’

  • Link to this news (এই সময়)