• দুর্ঘটনায় রাশ টানতে শহরে আধুনিক ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার
    এই সময় | ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • রাজ্যজুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে একের পর এক মোটর ট্রেনিং স্কুল। কিন্তু সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আদৌ কি তৈরি হচ্ছে ভালো চালক? সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর সারা দেশে যত পথ দুর্ঘটনা ঘটে, তার প্রায় ৮২ শতাংশই হয় চালকের ভুলে। ট্রেনের চালক বা প্লেনের পাইলট তৈরির জন্য আলাদা প্রশিক্ষণের কেন্দ্র থাকলেও বাস, লরি কিংবা প্রাইভেট গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নেওয়ার সেই রকম কোনও ব্যবস্থা নেই।

    সেই খামতি মেটাতে বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের কাছে অত্যাধুনিক মানের ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তুলছে রাজ্য সরকার। যেখান থেকে প্রশিক্ষিত চালক তৈরি হবে।

    পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেহালায় প্রস্তাবিত রিজিওনাল ড্রাইভার ট্রেনিং সেন্টার তৈরির কাজ এখন প্রায় শেষের পথে। ৮০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের অধিকর্তা ইখলাখ ইসলাম। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।

    এখানে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ–সুবিধা থাকবে। আরএফআইডি (রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন) প্রযুক্তির সাহায্যে ড্রাইভিং টেস্ট নেওয়া হবে। থাকবে ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা। থিওরি এবং প্র্যাকটিক্যাল, দু’রকমই ক্লাসের ব্যবস্থা থাকবে। যাঁরা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিতে আসবেন, তাঁদের থাকার জন্য হস্টেলের সুবিধাও থাকছে।

    পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, গাড়ি চালানো ছাড়াও একজন আদর্শ ড্রাইভার হওয়ার জন্য যে সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা দরকার সেগুলো সম্পর্কে ধারনা তৈরি করার জন্য নতুন সিলেবাস তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, বিহেভিয়েরাল প্র্যাক্টিসেস এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, ডিফেন্সিভ ড্রাইভিং টেকনিক্স, ইমার্জেন্সি হ্যান্ডলিং টেকনিক, কার মেনটেন্যান্স ও জ্বালানি সাশ্রয়, পরিবেশ ও দূষণ এবং কেস স্টাডির মাধ্যমে কোন কোন কারণে দুর্ঘটনা ঘটে সেটা ভালো করে উপলব্ধি করতে পারবেন শিক্ষনবিশ চালকরা।

    নবান্নের এক কর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই বেহালায় আধুনিক মানের ডাইভিং ট্রেনিং সেন্টার তৈরি হচ্ছে। এখানে যাঁরা প্রশিক্ষণ দেবেন তাঁদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। এ ছাড়াও ড্রাইভিংয়ে কম করে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মোটর মেকানিকসের সার্টিফিকেট অথবা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ড্রিগ্রি অথবা ডিপ্লোমা থাকতে হবে।

    কেন্দ্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দিতে দেশজুড়ে মডেল ড্রাইভার ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তোলা হবে। যা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ দেবে এবং একই সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্সও ইস্যু করবে। মোট তিনটি স্তরে এই ধরনের ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার তৈরি হবে। প্রথম স্তরে থাকবে মডেল ড্রাইভার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। যা তৈরি হবে ১০–১৫ একর জমি নিয়ে। দ্বিতীয় স্তরে থাকবে রিজিওনাল ড্রাইভার ট্রেনিং সেন্টার। এগুলো তৈরি হবে তিন একর জমির উপর। এ ছাড়া, প্রতিটি জেলা সদরে একটি করে ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার বানানো হবে। এগুলি পরিচালিত হবে পিপিপি মডেলে।

  • Link to this news (এই সময়)