এই সময়, খড়দহ: চারদিকে যখন বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ, তখন নিজের বিধানসভার অধীন তৃণমূল পরিচালিত খড়দহ পুরসভার বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূলেরই বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
পুরসভার বিরুদ্ধে পুকুর ভরাট, বেআইনি নির্মাণে মদত দেওয়ার মতো বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন মন্ত্রী। যা নিয়ে খড়দহে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ঘিরে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
শুক্রবার শোভনদেব বলেন, ‘প্রায় দিনই পুকুর ভরাট রুখতে আমাকে পুলিশ ও প্রশাসনকে ফোন করতে হয়। বেআইনি বহুতলও তৈরির অভিযোগ আসছে। পুরসভাকে ন্যায়ের পথে থাকার কথা বারবার বলেও তেমন লাভ হচ্ছে না।’ যদিও পুরপ্রধান নীলু সরকার বেআইনি কাজের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
উত্তর শহরতলির বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। এ বার খড়দহ পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কার্যত হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন মন্ত্রী শোভনদেব।
সম্প্রতি খড়দহের একটি অনুষ্ঠানে এসে মন্ত্রী বলেন, ‘খড়দহে পুকুর ভরাট বন্ধ করতে প্রায় প্রতিদিনই থানায় ফোন করতে হয়। কখনও আবার জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনার কেও ফোন করতে হচ্ছে। যারা এই কাজ করছে তারা সজ্ঞানে ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্ষতি করছে। আমি পুরসভাকে ন্যায়ের পথে থাকতে বলেছিলাম। অনলাইন ও বোর্ড মিটিং ছাড়াই বিল্ডিং প্ল্যান পাশের অভিযোগ আসছে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো এখানে থাকব না। আমার বাড়ি ভবানীপুর। এই শহরটা তো আপনাদের। শহরটাকে তো বাঁচাতে হবে। যে রাস্তায় দোতলা-তিনতলার বেশি বাড়ি হয় না, সেখানে বলা হচ্ছে করে নাও বাড়ি। পরে ফাইন দিয়ে দেবে।’
মন্ত্রীর এহেন অভিযোগে পুর এলাকা জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও বিরোধীদের প্রশ্ন, যদি সত্যিই খড়দহে বেআইনি কাজ মন্ত্রীর নজরে এসে থাকে তা হলে যারা বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত এবং তাদের যারা মদতকারী তাদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না?
সম্প্রতি খড়দহ বলরাম হাসপাতাল লাগোয়া এমএস মুখোপাধ্যায় রোডের একটি জমিতে পুরসভা বোর্ড লাগিয়ে দেয়। যাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। অভিযোগ, বেসরকারি ট্রাস্টের জমিতে পুরসভা বোর্ড লাগিয়ে নিজেদের জমি বলে দাবি করেছিল। পুরসভার একদল কাউন্সিলার জানান, তারা বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পুরসভার টেন্ডারে অনিয়ম নিয়েও সরব হয়েছেন কাউন্সিলাররা।
তাঁদের অভিযোগ, বড় কাজকে ভেঙে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে ই-টেন্ডার না করতে হয়। যদিও পুরপ্রধান নীলু সরকার স্পষ্ট বলেন, ‘মন্ত্রী কেন এমন বলছেন জানি না। তবে এমন কোনও অভিযোগ জানা নেই আমার। পুকুর ভরাট হোক কিংবা বেআইনি নির্মাণ, কেউ করলে পুরসভার নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে কড়া পদক্ষেপ করা হয়। ভবিষ্যতেও পুরসভা কড়া মনোভাব বজায় রাখবে।’