এই সময়: আবহাওয়া বদলাতেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে বাড়ছে অসুস্থ শিশুদের সংখ্যা। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারেও বাড়ছে ভিড়। প্রতিটি শিশুরই জ্বর, সর্দি, কাশি, বমির মতো উপসর্গ রয়েছে। কারও আবার নিউমোনিয়া দেখা যাচ্ছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। গোটা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে স্বাস্থ্য দপ্তর। কনকনে ঠান্ডার জেরে শিশুদের সর্দি–কাশি–জ্বর এই উপসর্গ নিয়েই শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে এই মুহূর্তে কম বেশি কুড়ি জন শিশু ভর্তি রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে সংখ্যাটা ২৫–এর কাছাকাছি। কালিম্পং, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, ফালাকাটা ও ময়নাগুড়ির বহু শিশু বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে এই মুহূর্তে সাত বছর বয়স পর্যন্ত ৪৪ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালে বেশ কিছু শিশু ভর্তি রয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩০ জন শিশুর জ্বর, পেটে ব্যথা ও সর্দি রয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ সরকারি মেডিক্যাল কলেজে শিশুভর্তির সংখ্যা বেশি। জেনারেল বেড, এসএনসিইউ মিলিয়ে ৮৪ জন ভর্তি রয়েছে। শুক্রবার দেড় বছরের আহমেদ রাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রায়গঞ্জের পানিশালার মহিগ্রামের বাসিন্দা ওই শিশুর সামান্য জ্বর, পায়খানা ও বমি হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাকে ভর্তি করা হয়। পরিবারের দাবি, হঠাৎ করে ঠান্ডা লেগে জ্বর আসে এরপরে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মারা যায়।
কথায় রয়েছে মাঘের শীতে বাঘও কাবু হয়ে যায়। বর্তমানে শিলিগুড়ি শহরেরও পরিস্থিতি একই। কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থা। দুপুরে প্রখর রোদ, রাতে ঠান্ডা। শীতে রোগের হাত থেকে শিশুদের বাঁচাতে কী করা প্রয়োজন? শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের প্রাক্তন চিকিৎসক সঞ্জিত তিওয়ারির বক্তব্য, ‘জ্বর–সর্দিতে অসুস্থ শিশুদের ভিড় বাড়ছে। গত কয়েক দিনে ট্রেন্ডটা বেশি দেখা যাচ্ছে। বাবা-মায়েরা আরও বেশি সচেতন হলে হয়তো শিশুরা কম কষ্ট পাবে।’
দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামাণিক বলেন, ‘এই সময়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য বাচ্চাদের একটু বেশি ঠান্ডা লাগে। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে শিশুরা সুস্থ হয়ে উঠবে। স্বাস্থ্য দপ্তরও নজর রাখছে।’ কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি সৌরদীপ রায় জানিয়েছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুরা বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছে। সকলকেই সাবধানে এবং সচেতন ভাবে থাকতে হবে। মেডিক্যালে ১০ জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। তারা নিয়মিত কাজ করছেন।