আজকাল ওয়েবডেস্ক: চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল কিছু অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে ওই যুবককে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফিল্ডপাড়া এলাকায় মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ওই যুবককে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হলে জঙ্গিপুর হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন শুক্রবার ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সামশেরগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে এই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই যুবকের নাম আব্দুল সইদ। তাঁর বাড়ি সামশেরগঞ্জ থানার শুলিতলা গ্রামে। মাথায় রক্তক্ষরণের জেরে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে। তবে শনিবার সকল পর্যন্ত মৃত ওই যুবকের পরিবারের তরফে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মৃত ওই যুবকের মা খাইরুন বিবি বলেন,' বৃহস্পতিবার রাতে এক মহিলা আমার ছেলেকে ফোন করেছিল। এরপরই সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরে আমরা জানতে পারি আমার ছেলেকে চোর সন্দেহে কিছু লোক বেধড়ক মারধর করেছে। আমার ছেলেকে গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়। পরে একটি বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল।' ওই মহিলা জানান,' ঘটনার খবর পেয়ে সামশেরগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ ওই এলাকায় যায় এবং আমার ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে।' ফিল্ডপাড়া এলাকার কিছু বাসিন্দা নাম না প্রকাশের শর্তে অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার ভোররাতে এক মহিলার বাড়ির দরজা খোলা দেখে ওই যুবক সেখানে ঢুকে পড়েছিলেন। হঠাৎ করে ওই মহিলার ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর বাড়ির ভেতরে অপরিচিত আব্দুলকে দেখতে পেয়ে তিনি চিৎকার করে ওঠেন। সেই সময় আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায় এবং আব্দুলকে হিজলতলার মাঠে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃত ওই যুবক মাদকাসক্ত ছিলেন। টাকা জোগাড়ের নেশায় মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো চুরি করতেন। একটি অপরাধের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ সাম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তারও করেছিল। গত শনিবার সে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পায়। মৃত ওই যুবকের পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, আব্দুল কোনও চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না। কিছু ব্যক্তি পরিকল্পনা করে তাকে হিজলতলার মাঠে মারধর করে পাশে একটি লিচুবাগানে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছিল। পরিবারের দাবি, যে মহিলার ফোন পেয়ে আব্দুল বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। মারধরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হোক।