জয়পুর উৎসব ও কৃষি মেলার সূচনা ঘিরে উন্মাদনা মানুষের
বর্তমান | ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: শনিবার পাঁচ কিমি ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে অষ্টম বর্ষ জয়পুর উৎসব ও কৃষি মেলার সূচনা হল। এদিন সকালে রাজগ্রাম থেকে জয়পুর পর্যন্ত ম্যারাথনে উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানার প্রতিযোগীরাও অংশ নেন। বিকেলে কুম্ভস্থল মোড় থেকে বের হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জয়পুর হাইস্কুল মাঠে মেলাপ্রাঙ্গণে শেষ হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি অনুসূয়া রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) নকুলচন্দ্র মাহাত, অতিরিক্ত জেলা পুলিস সুপার(অপারেশন) মকসুদ হাসান, বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ প্রমুখ। প্রথম দিনেই মেলায় উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
জয়পুর উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কৌশিক বটব্যাল বলেন, জয়পুর কৃষিপ্রধান এলাকা। সেই জন্য এবার জয়পুর উৎসবের সঙ্গেই কৃষিমেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও হস্তশিল্পের ২০টি স্টল বসানো হয়েছে। ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে শোভাযাত্রায় বিপুল মানুষের সাড়া পাওয়া যায়। ছ’দিন ধরে মেলা চলবে। সাংস্কৃতিক মঞ্চে স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও প্রতিদিন বাইরের শিল্পীদের অনুষ্ঠান রয়েছে।
জয়পুরের বিডিও দেবজ্যোতি পাত্র বলেন, জয়পুর উৎসবে ছ’দিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি নাটক ও যাত্রাপালা পরিবেশিত হবে। এদিন সকালে ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে প্রতিযোগিতারা অংশ নেন। জয়পুর উৎসব যে রাজ্য ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যেও পৌঁছে গিয়েছে, সেটা আমাদের অন্যতম বড় সাফল্য। পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি তথা উৎসব কমিটির কার্যকরী সভাপতি শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জয়পুর উৎসব এলাকার প্রাণের উৎসব। গোটা ব্লকের মানুষ উৎসবে শামিল হয়েছেন। উৎসবের সূচনালগ্নের শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল নামে।
প্রসঙ্গত, মল্লরাজাদের প্রথম রাজধানী জয়পুরের পদ্মুঘ্নগড়ে অবস্থিত ছিল। সেখানে আজও রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ ও মন্দির রয়েছে। এছাড়াও গোকুলনগরে ঐতিহাসিক গোকুলচাঁদ মন্দির সহ ঘন বনাঞ্চলকে কেন্দ্র করে জয়পুরকে পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্ররূপে গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে জয়পুরে প্রচুর পর্যটক আসছেন। তার প্রচার ও প্রসারে জয়পুর উৎসবের বড় ভূমিকা রয়েছে। এবারের উৎসবেও জয়পুরের পর্যটনকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জয়পুর ব্লক মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা। সেই জন্য এবার উৎসবের পাশাপাশি কৃষিমেলাকেও যুক্ত করা হয়েছে। কৃষি প্রদর্শনী এবং কৃষকবন্ধু সহ দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবহিত করার জন্য বিশেষ স্টল থাকবে। চাষিরা সেখানে তাঁদের সমস্যা ও সুবিধার কথা জানতে পারবেন। এছাড়াও হস্তশিল্পের স্টলে স্থানীয় ছাড়াও বাইরের শিল্পীরাও তাঁদের শিল্পসামগ্রী নিয়ে বসেছেন। প্রচুর খাবারের স্টল থাকবে। জয়পুর উৎসবকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের মধ্যে বিপুল উন্মাদনা দেখা দিয়েছে।