• সীমান্ত লাগোয়া গোয়াল ভাড়া নিচ্ছে গোরু পাচারকারীরা
    বর্তমান | ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: গোরু পাচারের আগে ভাড়া দেওয়া হয় গোয়াল। প্রতি রাত হিসাবে গোয়াল ঘর ভাড়া দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করছে সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা। মাত্র ১২ ঘণ্টা গোরু রাখার জন্য পাচারকারীদের দিতে হয় প্রায় হাজার দেড়েক টাকা। সূতি এলাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে মাঝেমধ্যে গোরু পাচারের চেষ্টা করে পাচারকারীরা। কিন্তু সীমান্তে বিএসএফের ধরপাকড় বেড়ে যাওয়াতে গোরু রেখে মাঝেমধ্যেই গা ঢাকা দিতে হয় তাদের। যে পথ দিয়ে গোরু নিয়ে আসতে হয়, সেই পথে ফেরা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। পাচারকারীদের তখন একমাত্র ভরসা স্থানীয় গ্রামবাসীদের গোয়ালঘর। কয়েকদিনের জন্য গোয়াল ভাড়া নিয়ে নেয় পাচারকারীরা। প্রতি রাতের জন্য দিতে হয় প্রায় হাজার দেড়েক টাকা। এভাবে পাচারের গোরু লুকিয়ে রাখতে সাহায্য করায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সূতি থানার পুলিস। ধৃতরা হল, গৌর ঘোষ ও দুখু শেখ। পুলিস জানিয়েছে, গত ২২ জানুয়ারি সূতির সীমান্তবর্তী এলাকায় আমবাগানের ভিতরে থাকা এক গোয়াল থেকে দু’টি গোরু উদ্ধার করা হয়। অন্য জায়গা থেকে গোরু দু’টিকে এনে সেখানে রাখা হয়েছিল। সুযোগ বুঝে সীমান্ত পার করে ওপার বাংলায় পাচার করে দেওয়া হতো তাদের। কিন্তু তার আগেই পুলিস ওই গোয়ালের মালিক ও পাচারকারী এক রাখালকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের আদালতে তুলে হেফাজতে নিয়েছে সূতি থানার পুলিস। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, প্রতি রাতে এক একটি গোরু রাখার জন্য দেড় হাজার টাকা করে তারা পেয়েছে। 


    ফরাক্কার এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান বলেন, দু’জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অবৈধ উপায়ে ওপারে গোরু পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল। সীমান্তে কড়া পাহারা দেখে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। তার আগে পাচারকারীরা গোরু দু’টিকে অভিযুক্তদের হেফাজতে রেখে যায়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এ কথা জানা গিয়েছে। প্রতি রাতে গোয়াল ঘর ভাড়া দিয়ে মোটা টাকা উপার্জন করেছে তারা।  স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যাঁরা এলাকায় গো-পালন করেন, তাঁদের টার্গেট করে পাচারকারীরা। তাদের গোরুর সঙ্গে কয়েকদিনের জন্য পাচারের গোরু রেখে দেওয়ার বদলে মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখানো হয়। সেই টোপ গিলে অনেকেই বাইরের গোরু নিজেদের গোয়াল ঘরে রাখছে। তবে এইসব গোরুর চেহারা এতটাই আলাদা হয় যে, অন্য গোরুর সঙ্গে কিছুতেই মেলে না। ফলে গ্রামের মাঠে কিংবা বাগানে সেই গোরু চরাতে গেলেই লোকজন সহজেই ধরে ফেলেন। গ্রামবাসীরা তখন পুলিসকে খবর দেয়। এদিনও ঠিক একইভাবে খবর পেয়ে সূতি থানার পুলিস গোরু উদ্ধার করে। 
  • Link to this news (বর্তমান)