• ভাসমান সোলার সিস্টেমের সমস্যা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক, মিলল না সমাধান সূত্র
    বর্তমান | ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: শুক্রবার নিতুড়িয়া ব্লকের পাঞ্চেৎ জলাধারের মহেশ নদের উপর ভাসমান সোলার প্রজেক্টের সমস্যা সমাধান নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। ওইদিন রঘুনাথপুর মহকুমা শাসকের দপ্তরে বৈঠকটি হয়। বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বৈঠকে মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিক, ডিভিসি কর্তৃপক্ষ এবং এলাকার বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ ঘন্টার বৈঠকেও শেষ পর্যন্ত কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। তাই আগামী দিন সমস্যার সমাধানের জন্য সরস্বতী পুজোর পর আবার বৈঠক করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যতদিন না পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হচ্ছে, ততদিন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ভাসমান সোলার প্রজেক্ট এলাকায় করতে পারবে না।


    রঘুনাথপুর মহকুমা শাসক বিবেক পঙ্কজ বলেন, এলাকার বাসিন্দা ও ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে নিয়ে ওইদিন বৈঠক করা হয়েছিল। উভয়পক্ষ তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সঠিক কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। উভয়পক্ষের তরফ থেকে কিছু সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই আগামী দিনে আবার বৈঠক হবে।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ পাঞ্চেৎ জলাধারের মহেশ নদের উপর ৭৫ মেগাওয়াট ভাসমান সোলার প্রজেক্ট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, জলাধারের উপর সোলার প্রজেক্ট হলে নদীর দুই পারের শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মৎস্যজীবীর জীবন ও জীবিকা সঙ্কটের সম্মুখীন হবে। শুধু তাই নয়, রায়বাঁধ ও গুনিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৫২টির বেশি গ্রাম ব্লক সদর, থানা সদর সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। কারণ ওই দুই পঞ্চায়েত এলাকার মানুষকে পাঞ্চেৎ জলাধারের উপর দিয়ে ব্লক এলাকার যে কোনও কাজের জন্য নৌকাপথে যাতায়াত করতে হয়। তাই প্রজেক্ট বাতিলের‌ দাবিতে সেতু নির্মাণ ও মৎস্যজীবী জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটির তরফ থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছে। সংগঠনের দাবি, এলাকার মানুষের মাছ ধরার জন্য ডিভিসিকে ব্যবস্থা করতে হবে এবং যাতায়াতের স্থায়ী সেতু নির্মাণ করতে হবে।


    সংগঠনের সভাপতি রাজেন টুডু বলেন, সোলার প্রজেক্ট হলে মাছ ধরা যাবে না। অন্যদিকে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে প্রচুর মানুষ সমস্যায় পড়বেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য মহকুমা প্রশাসন‌ ডিভিসিকে নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ আমাদের বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে। আমরা প্রজেক্টের বিরোধিতা করিনি। আমরা দাবি রেখেছি, এলাকার মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে এবং চলাচলের জন্য স্থায়ী সেতু নির্মাণ করতে হবে। কর্তৃপক্ষ দু’টি প্রস্তাবে রাজি হলে এবং লিখিত আকারে দেওয়া হলে তবেই প্রজেক্ট করতে দেওয়া হবে। নাহলে আমাদের আন্দোলন চলবে। বৈঠকে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ কোনও সদুত্তর দেয়নি। তাই সমস্যার সমাধান হয়নি। ভবিষ্যতে প্রশাসনের তরফ থেকে আরও বৈঠক করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)