নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ভূপতিনগর থানার রাধাপুরে নন্দীগ্রামের নাবালিকাকে গোপনে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। পাত্র ও পাত্রী দুই পরিবারের অন্তত ৩০জন আত্মীয়স্বজন বিয়ে উপলক্ষ্যে হাজির হয়েছিলেন। গোপন সূত্রে গ্রাম পঞ্চায়েতে বিয়ের খবর পৌঁছে যাওয়ার পরই থানায় খবর দেওয়া হয়। রাতেই পুলিস রাধাপুর গ্রামে হানা দিয়ে বিয়ের আগেই নাবালিকাকে উদ্ধার করে। পুলিস দেখে বিয়ের আসর থেকে লোকজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পাত্র ও পাত্রী দু’জনকে থানায় আনা হয়। দু’জনের অভিভাবকের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম থানার মহেশপুর গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে ওই থানার কমলপুর গ্রামের ১৭বছর বয়সি এক নাবালিকার বিয়ের আসর বসেছিল। পাত্রী নাবালিকা হওয়ায় নন্দীগ্রামে বিয়ের ঝুঁকি নেয়নি দুই পরিবার। পরিবর্তে ভূপতিনগর থানার রাধাপুর গ্রামে অমলকুমার দাসের বাড়িতে গোপনে বিয়ের আসর বসেছিল। বিয়ে উপলক্ষ্যে দুই পরিবার থেকে প্রায় ২৫-৩০জন হাজির হয়েছিলেন। ওই গৃহকর্তার পুত্রবধূর বাপের বাড়ি নন্দীগ্রামে। সেই সুবাদে পরিচিতি থেকে বিয়ের আসর বসেছিল।
নন্দীগ্রামের যুগলের গোপনে বিয়ের খবর পান রাধাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান উৎপল ধাড়া। দুয়ারে সরকার ক্যাম্প শেষ করে সবেমাত্র উৎপলবাবু সহ অন্যান্যরা পঞ্চায়েত অফিসে বসেছিলেন। সেইসময় নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে পঞ্চায়েত প্রধান থানায় ফোন করেন। ওই থানার সাব ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বাহিনী রাধাপুরে রওনা দেয়। সঙ্গে ছিলেন রাধাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান উৎপলবাবু ও তাঁর টিম। বাড়ির ভিতর গোপনে বিয়ের আসর বসেছিল। আচমকা পুলিস পৌঁছে যেতেই দুই পরিবারের আত্মীয়স্বজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। যদিও কয়েকজনকে পালানোর চেষ্টায় বাধা দেওয়া হয়। বিয়ের আসর থেকে পাত্র ও নাবালিকা পাত্রী দু’জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। দুই পরিবারের লোকজনও থানায় পৌঁছন। রাতেই নাবালিকার বাবার কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে ছেড়ে দেয় পুলিস। ১৮বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে নাবালিকার বাবা পুলিসকে মুচলেকা দেন। শনিবার সকালে ওই যুবকের বাড়ির লোকজন থানায় হাজির হন। মুচলেকা আদায় করে যুবককে থানা থেকে ছাড়া হয়। রাধাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, নন্দীগ্রামের বাসিন্দা দু’জনকে এখানে এনে গোপনে বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছিল। মেয়েটির বয়স ১৮ হয়নি। ওই এলাকা থেকে আমরা খবর পাওয়ামাত্র পুলিসকে জানাই। রাতে পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে বিয়ে আটকানো হয়। এই ঘটনায় গৃহকর্তাকেও সতর্ক করা হয়েছে। ভূপতিনগর থানার ওসি শেখ মহম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, আমরা নাবালিকার বিয়ে আটকেছি। তার বাবা আমাদের কাছে মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছেন।