• টাকা কমিয়ে জঙ্গলে এন্ট্রি ফি চালু থাকুক, চাইছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা
    বর্তমান | ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: উত্তরবঙ্গের তিন জঙ্গল থেকে এন্ট্রি ফি তুলে নেওয়া হয়েছে। এই সুবিধা মেলায় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান ও গোরুমারা অভয়ারণ্যে ভিড় আছড়ে পড়েছে। জঙ্গলের দরজা অবারিত হওয়ায় চোরাশিকারি, কাঠ চুরি ও মানুষ-বন্যপ্রাণী সংঘাত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাই পর্যটন ব্যবসায়ী, কার সাফারি মালিক ও গাইডরা চাইছেন জঙ্গলের নিয়ন্ত্রণ বনদপ্তরের হাতে থাকুক। জঙ্গল ও বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার স্বার্থে টাকার পরিমাণ কমিয়ে জঙ্গলে এন্ট্রি ফি চালু থাকুক। এই দাবিতে তাঁরা প্রথমে বনমন্ত্রী ও পরে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।


    শনিবার আলিপুরদুয়ারে সাংবাদিক সম্মেলন করে ইস্টার্ন ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আমরা এই দাবিতে বনমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছি। আমরা চাইছি টাকা কমিয়ে এন্ট্রি ফি চালু রেখে জঙ্গলের নিয়ন্ত্রণ বনদপ্তরের হাতে থাকুক। তা না হলে জঙ্গল ও বন্যপ্রাণীদের কোনও সুরক্ষা থাকবে না। 


    শুধু জঙ্গল বা বন্যপ্রাণীর সুরক্ষাই নয়, জঙ্গল প্রবেশের কড়াকড়ি শিথিল হওয়ায় গাইডদের কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। এন্ট্রি ফি থেকে আসা রাজস্ব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জঙ্গল সাফাই ও জঙ্গলের পথঘাট পরিষ্কার হবে কোন টাকায় তা নিয়েও ফাঁপড়ে পড়েছেন বনকর্তারা। বনদপ্তরে কাজ করা ঠিকা শ্রমিকদের বেতন কোথা থেকে আসবে তা নিয়েও অনিশ্চিয়তা তৈরি হবে।


    এন্ট্রি ফি’র টাকার একটা অংশ বনদপ্তর জঙ্গল সংলগ্ন জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি (জেএফএমসি) ও গ্রামসভাগুলিকে দেয়। এই টাকায় জেএফএমসি ও গ্রামসভাগুলি এলাকায় নানা উন্নয়নের কাজ করে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ৬৫টি গ্রামসভা আছে। গত আর্থিক বছরে এই গ্রামসভাগুলিকে বক্সা কর্তৃপক্ষ ৫৮ লক্ষ টাকা দিয়েছে। জলদাপাড়ায় ৭২টি জেএফএমসি জেএফএমসিগুলি গত আর্থিক বছরে পেয়েছে দুই কোটি টাকা। গোরুমারার ১৭টি জেএফএমসিকে গত আর্থিক বছরে দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৫ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। এবার জেএফএমসি বা গ্রামসভাগুলির টাকা আসবে কোথা থেকে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 


    তবে সরকারি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বনদপ্তরের কর্তারা কেউই মুখ খুলতে রাজি নন। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল দেবল রায় বলেন, আমি এনিয়ে একটি কথাও বলব না। এনিয়ে স্থানীয় স্তরে কথা বলুন। 


    উল্লেখ্য, গত বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকে বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, বক্সর রাজাভাতভাওয়া চেকপোস্টে পর্যটকদের কাছ থেকে মোটা টাকা এন্ট্রি ফি নেওয়া হচ্ছে। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তিন জঙ্গলে এন্ট্রি ফি তুলে দেওয়া হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)