নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: মৃত্যুর পরও রেহাই পাচ্ছেন না জলপাইগুড়ির প্রসূতি সান্ত্বনা রায়। মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আগেই জানিয়েছে মৃতার পরিবার। এবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করাতে গিয়ে হেনস্তার অভিযোগ উঠল। শনিবার ময়নাতদন্ত হয়নি। ২৯ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে সিজারে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সান্ত্বনাদেবী (২৩)। তারপর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয় ২ জানুয়ারি। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বিষাক্ত স্যালাইন ও ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণেই কিডনি খারাপ হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে তাঁর মৃত্যু হয়।
শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য এসে ফিরে যেতে হল মৃতার স্বামী, দেবর সহ পরিবারের সদস্যদের। দেওর প্রভাত মাতব্বর বলেন, শুক্রবার দুপুরে বউদি মারা যাওয়ার পর থেকে ছোটাছুটি করে চলেছি মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করানোর জন্য। এদিন সকালে সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম। আমাদের দিয়ে প্রথমে একটি ফর্ম পূরণ করিয়ে মৃতার স্বামী হিসেবে আমার দাদাকে দিয়ে তাতে সই করানো হয়। কিন্তু দুপুরের পর হঠাৎই ম্যাজিস্ট্রেট এসে সবকিছু দেখে জানান এভাবে ময়নাতদন্ত হবে না। ময়নাতদন্তের জন্য বউদির রক্তের সম্পর্কের কাউকে ফর্ম পূরণ করে সই করাতে হবে। একথা শোনার পর আমরা বউদির বাপের বাড়ির সদস্যকে দিয়ে ফর্ম পূরণ করিয়ে সই করাই। কিন্তু ততক্ষণে সময় শেষ বলে আমাদের জানানো হয়। বলা হয় রবিবার ময়নাতদন্ত হবে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান রাজীব প্রসাদ বলেন, কাগজপত্র তৈরি না হওয়ায় এদিন সান্ত্বনা রায়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হয়নি।
এদিকে, প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে পুলিসে অভিযোগ দায়ের পরিবারের। যদিও মৃতার বাড়ির লোকজনের দাবি, শনিবার ওই অভিযোগ দায়ের করা নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। এদিন সকালে প্রথমে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে আসে মৃতার পরিবার। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও থানায় তা জমা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
এরপর পুলিস সুপারের অফিসে অভিযোগ জানাতে যায় তারা। সেখানেও পুলিসের তরফে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। পরে একপ্রকার জোর করেই পুলিস সুপারের অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার পরিবারের লোকজন। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার খণ্ডবাহালে উমেশ গণপত।