• নোদাখালিতে গুলিতে জখম তৃণমূল নেতা
    বর্তমান | ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাত, বজবজ: এবার শ্যুট আউটের ঘটনা ঘটল নোদাখালি থানার নতুন রাস্তা ও ডোঙারিয়া স্কুলের মাঝে। পরপর তিনবার গুলি চালানো হয় ডি রায়পুর অঞ্চলের তৃণমূল যুব সভাপতিকে কৃষ্ণ মণ্ডলকে লক্ষ্য করে। তার মধ্যে দুটি গুলি লক্ষ্যচ্যুত হলেও একটি কৃষ্ণবাবুর কোমর ও শিড়দাঁড়ার সংযোগস্থল ভেদ করে ঢুকে যায়। শনিবার বেলা ১১টার সময় ঘটনাটি ঘটে। তখন একটি মোটরবাইকের পিছনে চেপে বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন বছর চল্লিশের কৃষ্ণবাবু। বাইক চালাচ্ছিলেন অনুগত এক সঙ্গী। গুলি লাগতেই যন্ত্রণায় ককিয়ে মোটরবাইক থেকে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। লোকজন জমে যায়।


    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিনটি মোটরবাইক কৃষ্ণকে অনুসরণ করছিল। বাইকআরোহীদের সকলের মাথাই হেলমেটে ঢাকা ছিল। ওই তিনটির মধ্যে সামনের বাইকটি থেকে গুলি চালানো হয়। ঘটনার পরই আততায়ীরা দ্রুত মোটরবাইক চালিয়ে উধাও হয়ে যায়। কৃষ্ণবাবু নিজের মোবাইল থেকে পরিচিতদের ফোন করে এই খবর জানান। এরপর একটি অটো করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় লক্ষ্মীবালা মুচিসা হাসপাতালে। সেখান থেকে কলকাতার খিদিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তাঁকে। তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন এখন।


    প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, দলের মধ্যে কৃষ্ণ মণ্ডলের গোষ্ঠীর সঙ্গে পাল্টা গোষ্ঠীর অনেকদিন ধরে বিরোধ চলছে। কৃষ্ণ জনস্বাস্থ্য দপ্তরের জল প্রকল্পের ঠিকাদারির কাজ করেন। সেখানে প্রশাসনের সকলের সঙ্গে সু-সম্পর্ক আছে তাঁর। এটাও তাঁর বিরোধী শিবিরের পছন্দ নয়। তাই উভয় ক্ষেত্র থেকে তাঁকে সরানোর জন্য অনেকদিন ধরে সক্রিয় একটি অংশ। দু’বছর আগেও একবার তাঁর উপর হামলা হয়েছিল। সেবার ডোঙারিয়ার বাজারের কাছে সকাল সাতটার সময় মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন। তখন গুলি চালানো হয়। তাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই ঘটনায় দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছিল। এরপরে সুস্থ হয়ে ফিরে দলের কাজ ও ঠিকাদারিতে মন দিয়েছিলেন কৃষ্ণবাবু। তবে এদিনের ঘটনার পিছনে সেই গোষ্ঠী বিবাদই কাজ করেছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিসের কাছে। তবে নোদাখালির এই জল প্রকল্প ঘিরে একটা বড় সিন্ডিকেট কাজ করছে। সেটি শাসকদলের অনুগতদের নিয়ন্ত্রণে। সেই সিন্ডিকেটের কারও ইশারায় এমন হল কি না, তাও পুলিস খতিয়ে দেখছে।


    এদিন এই ঘটনার পর কৃষ্ণবাবুর বাড়ির লোকজন রীতিমতো আতঙ্কিত। তাঁদের কথায়, এনিয়ে পরপর দুই বার টার্গেট করা হল। তাঁকে আগেই বলা হয়েছিল, এবার দল ছেড়ে দিতে। এদিকে, ঘটনাটি নিয়ে দলের পদাধিকারীদের অনেকেই মুখ খুলতে চাননি। সন্ধ্যায় অবশ্য জেলা পরিষদের সদস্য অর্পণ নস্কর বলেন, কেন হামলা হল এবং কারা করল, তা এখনও জানা যায়নি। তবে এর সঙ্গে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যুক্ত থাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)