পাটুলির ভাসমান বাজার নিয়ে বিরক্ত মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এবং কলকাতা পুরসভা আগেই বাজারটি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। পরে ওখানকার দোকানদারেরা সরাসরি মেয়রকে অনুরোধ করায় সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়। ফের ওই বাজার নিয়ে মেয়রের কাছে অভিযোগ জানান এক বাসিন্দা। ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ওই অভিযোগ শুনে বিরক্ত মেয়র মন্তব্য করেন,‘অনেক হয়েছে, আর নয়। এ বার বাজারটা তুলে দেবো। লোকের অসুবিধা করে ওই বাজার রাখার দরকার নেই।’
শুক্রবার পাটুলির বাসিন্দা অজয় সরকার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন করে বলেন, ‘জলাশয়ের উপরে ভাসমান বাজার রয়েছে, তার দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। মশা, মাছির উপদ্রব বাড়ছে।’ অভিযোগ শুনে মেয়র অজয়কে বলেন,‘ওখানকার হকাররা কিছু করে না। তাই ওটা তুলে দিতে চেয়েছিলাম। সে সময়ে হকার ইউনিয়নের নেতারা অনুরোধ করায় বাজারটা রেখেছিলাম। আর নয়।’
ভাসমান বাজার নিয়ে বৃজি–পাটুলির বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। একাধিক বাসিন্দা জানান, পচা গন্ধে ওই বাজারের পাশ দিয়ে যাতায়াত করা যায় না। আশপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্গন্ধে তাঁরা ফ্ল্যাটের জানলা খুলতে পারেন না। দুঃসহ অবস্থায় বসবাস করতে হয়।
২০১৮ সালে ইএম বাইপাস লাগোয়া বৃজি–পাটুলি এলাকায় দুটি জলাশয় একত্রিত করে এই বাজার নির্মাণ করেছিল কেএমডিএ এবং কলকাতা পুরসভা। কাশ্মীরের আদলে, জলাশয়ের উপরে ভাসমান বাজার। শুরুতে১১২টা নৌকার উপরে ২০০টি দোকান ছিল। ২০২০ সালে উম্পুনে ব্যাপক ক্ষতি হয় বাজারের। সূত্রের খবর, বাজার নির্মাণে কেএমডিএ প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয় করেছিল। উম্পুনের ঝড়ের পরে দীর্ঘ দিন ওই বাজার বন্ধ রাখা হয়।
পরে তিন কোটি টাকা খরচ করে ফের ওই বাজার সংস্কার করেছিল কেএমডিএ। সংস্কারের ৫৭টি নৌকো রাখা হয়। কিন্তু তারপর থেকে বাজারটি ধীরে ধীরে রুগ্ন হয়ে পড়ে। পুরসভা সূ্ত্রে খবর, এখন হাতে গোনা কয়েকটি দোকান রয়েছে সেখানে। পরিবেশও খুব অপরিচ্ছন্ন। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ‘এত টাকা ব্যয় করে এ রকম বাজার করার কী দরকার ছিল?’ তার চেয়ে জলাশয় দু’টি সুন্দর করে সাজিয়ে দিলে কাজে লাগতো বলে মত এলাকার বাসিন্দাদের।