এই সময়, শিলিগুড়ি: চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ছিলই। এ বার জলপাইগুড়ির প্রসূতির ময়না তদন্ত নিয়েও অভিযোগ উঠল। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দিনভর টালবাহানার পরে বাড়ি ফিরে যান পরিবারের সদস্যরা। জানা গিয়েছে, পুলিশ প্রথমে মৃতার মামাকে কাগজে সই করান। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট সাফ জানিয়ে দেন, রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ছাড়া ময়না তদন্ত হবে না।
শেষ পর্যন্ত মৃতদেহ মর্গে রেখেই ফিরে যান মৃতার পরিবার। আজ রবিবার ফের মৃত প্রসূতি সান্ত্বনা রায়ের ময়না তদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার সঞ্জয় মল্লিকের দপ্তরে বিক্ষোভ দেখান শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর প্রশ্ন, ‘উত্তরবঙ্গের একমাত্র রেফারেল হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীর ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা নেই কেন? এই ঘটনা স্বাস্থ্য দপ্তরের বেহাল দশাকেই ফের সামনে নিয়ে এল।’
গত শুক্রবার দুপুরে জলপাইগুড়ির প্রসূতি সান্ত্বনা রায়ের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে ওই মহিলা পাঁচ দিন ভেন্টিলেশনে ছিলেন। কিডনির অসুখে আক্রান্ত হয়েই তিনি জলপাইগুড়ি থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার হয়ে এসেছিলেন। কিন্তু পরিকাঠামো না-থাকায় ভেন্টিলেশনে পাঠানোর পরে তাঁর ডায়ালিসিস করানো সম্ভব হয়নি। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজেই প্রসবের পরে তিনি কিডনি সংক্রমণে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ।
মৃতার স্বামী বলেন, ‘জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা ইউনিটে স্ত্রীর ভুল চিকিৎসা হয়েছে। তাই আমরা ময়না তদন্তের দাবি জানিয়েছি।’ সেই ময়না তদন্ত নিয়েও এ দিন দিনভর টালবাহানা চলে। আজ, রবিবার মৃতার দাদাকে সঙ্গে নিয়ে এসে ময়না তদন্ত করাবেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘এখানে যখন চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই তখন কলকাতায় রেফার করে দেওয়া যেত। মেদিনীপুরের রোগিণীকেও কলকাতায় রেফার করা হয়েছিল। আমাদের বেলায় অন্য রকম কেন? ময়না তদন্ত নিয়েও টালবাহান চলছে। ময়না তদন্ত না-হলে আমরা দেহ নেব না।’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার বলেন, ‘আমরা তো পোর্টেবল ডায়ালিসিস স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে চেয়েছি। এখনও পাইনি। এই কারণেই ওই রোগিণীর ক্ষেত্রে আমরা কিছু করতে পারিনি।’ শিলিগুড়ির বিধায়ক বলেন, ‘এমনই বেহাল মেডিক্যাল কলেজের যে পুলিশ গুলি খেয়ে জখম হলেও এখানে আনা হয় না। আর সাধারণ মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়।’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও অভিযোগ করেন, ‘উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে এইমস–এর পরিকাঠামো তৈরির কথা। কেন সেটা আজও হয়নি?’