• ‘টক টু মেয়র’ ১০০, কচি মুখে সবুজের বার্তা
    এই সময় | ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: স্মরণীয় হয়ে রইল শততম অনুষ্ঠান। মাসে চার বার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। সেখানে ফোন করে রাস্তা খারাপ, জল নেই, আবর্জনা পরিষ্কার হচ্ছে না, শুনে অভ্যস্ত তিনি। শনিবার সেই ‘সমস্যার’ পুনরাবৃত্তি হয়েছে বটে, কিন্তু ‘যৌবনের দূত’দের কাছে গাছ লাগানোর বার্তা শুনে খুশি হন মেয়র। সমস্যার কচকচানির মধ্যে হঠাৎ যেন উত্তরের ঠান্ডা বাতাস।

    ছাত্রছাত্রীদের মুখে শিলিগুড়িকে সবুজ করার বার্তা শুনে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত গৌতম। গাছ লাগাতে কেউ কোথায় বাধা দেবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন মেয়র। তবে শর্ত দিয়ে বলেছেন, ‘ওই গাছ দেখভাল করতে হবে।’

    প্রতি সপ্তাহে এক বার সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার ‘টক টু মেয়র’ লাইভ ফোন–ইন অনুষ্ঠান হয় শিলিগুড়ি পুরনিগমের কনফারেন্স হলে। এ দিন ১০০তম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল শিলিগুড়ি পুরনিগমের ক্যাম্পাসে, প্যান্ডাল করে। স্টেজে ছিলেন মেয়র–সহ আধিকারিকেরা। সামনে আম জনতার বসার জায়গা। সেখানে স্কুল–কলেজের পড়ুয়া, কাউন্সিলার, পুরসভার নাগরিক, এবং পুরনিগমের কর্মীরা ছিলেন।

    সব মিলিয়ে এ দিন এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিটে ৪৫টি ফোন গ্রহণ করেন মেয়র। শিলিগুড়ি পুর নিগম তো বটেই বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকেও মেয়রের কাছে ফোন আসে। কেউ রাস্তাঘাটের সমস্যা, কেউ পানীয় জলের সমস্যা, কেও আবার লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। এরপর শুরু হয় ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার পর্ব। শিলিগুড়ি কলেজ, সূর্য সেন কলেজ ছাড়াও শিলিগুড়ি পুরনিগমের আলোর দিশারী শিক্ষাকেন্দ্রের পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন গৌতম।

    শিলিগুড়ি কলেজের ছাত্র অমর সরকার ও তার বন্ধুরা গাছ লাগাতে ভালোবাসে। তারা মেয়রকে জানায়, রাস্তা চওড়া হওয়ার জন্য ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় বেশ কিছু গাছ কাটা পড়েছিল। সেই জায়গায় তারা গাছ লাগাতে চায়। কিন্তু বন দপ্তর থেকে অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের আশ্বস্ত করেন মেয়র। বন দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে গাছের চারা, গাছ বাঁচানোর খাঁচা সবকিছুর ব্যবস্থা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। পরিবর্তে পড়ুয়াদের গাছগুলি দেখভাল করতে হবে।

    মেয়রের আশ্বাস পেয়ে খুশি হয় অমর ও তার সঙ্গীরা। আলোর দিশারী কোচিং ক্যাম্পে পুরনিগম প্রবেশিকামূলক পরীক্ষার কোচিং চালু করা হলে অনেক সুবিধা হবে বলে মেয়রের কাছে আবেদন জানায় পড়ুয়া সাত্যকী চৌধুরী। একই আবেদন আসে পড়ুয়া শ্রাবণী চক্রবর্তীর দিক থেকেও। বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দেন মেয়র। সকালে হাসমিচকে যানজটের জন্য সূর্য সেন কলেজ যেতে দেরি হয়। তাই সমস্যা সমাধানের আবেদন করে গুড়ুংবস্তির বাসিন্দা পড়ুয়া রাজকুমারী শাহ।

    ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এই আলাপ আলোচনা পর্বে সাধারণ মানুষও অংশ নিয়েছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে মেয়রের বক্তব্য, ‘আমরা চাই পড়ুয়ারা পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যরকম কাজে যুক্ত হোক। কোথাও কেউ গাছ লাগাতে বাধা দেবে না। আমি পড়ুয়াদের বলেছি ২৮ বা ২৯ তারিখ আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমি বন দপ্তরকে বলে খাঁচার ব্যবস্থা করে দেবো।’

  • Link to this news (এই সময়)