• 'CBI বলছে মেয়ে মারা গিয়েছে আপনার, দায় আপনাকে নিতে হবে'!
    ২৪ ঘন্টা | ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'সিবিআই বলছে, মেয়ে মারা গিয়েছে আপনার, দায় আপনাকে নিতে হবে'। আরজি কর কাণ্ডে বিস্ফোরক নির্যাতিতার পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, 'পুলিস যেমন তথ্য-প্রমাণ লোপাট করেছিল, সিবিআই-ও তেমন তথ্য-প্রমাণ লোপাট করেছে'।

    নির্যাতিতার বাবা-মায়ের দাবি, 'সিবিআই তো আরজি করে যাওয়া ১৫ দিন ধরে বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের যে তদন্তকারী অফিসার, সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার দিন উপস্থিত ছিল না। কার সম্পর্কে এরপরে কী বলতে পারি আমরা! সিবিআইয়ের একজন কর্তব্যরত কর্মচারী আমাকে বলেছে, মেয়ে মারা গিয়েছে আপনার, দায় আপনাকে নিতে হবে। কেউ কিছু করে দেবে না। পুলিস যা করেছে, তার থেকে জঘন্যতম কাজ করেছে সিবিআই'।

    কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে  আরজি করে তরুণী চিকিত্‍সকে খুন ও ধর্ষণের তদন্তে নামে সিবিআই। এরপর শিয়ালদহ কোর্টে চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কবে? ৭ অক্টোবর। অভিযুক্ত সেই সঞ্জয় রায়ই। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছিল পুলিস। ৬০ দিন ধরে মামলাটি শুনানি চলে শিয়ালদহ কোর্টে। শেষে ১৮ জানুয়ারি সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ২ দিন পর আমৃত্যু কারাবাসে সাজা ঘোষণা করেন বিচারক।

    বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, 'যেখানে সরকার স্বয়ং তথ্য-প্রমাণ লোপাট করা এবং যাঁরা এই ঘটনায় অভিযুক্ত, তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে, সেই সরকারের পুলিস বাহিনী যেভাবে দোষীদের পক্ষ নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই যেকোনও তদন্তকারী সংস্থার পক্ষেই এই তদন্ত সঠিকভাবে চালিয়ে যাওয়াটা কঠিন কাজ। বিচার চলাকালীন সিবিআই একথা আদালতে জানিয়েছেন, যে রাজ্য সরকার অসহযোগিতা করছে। রাজ্য পুলিস অসহযোগিতা করছে, তথ্য-প্রমাণ লোপাটের কাজ চলছে। এই প্রসঙ্গটাও মাথায় রাখা উচিত'। তাঁর মতে, 'যাঁরা যেভাবে বোঝাচ্ছে, তাঁরা সেইভাবেই তাদের বক্তব্যকে প্রকাশ করছে'।

    প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, সরকারের উচিত ছিল, 'অপরাধের উত্‍সটা কোথায়, বারেবারে যেটা আমি বলছি, লালসার কারণে মেয়েটি খুন হলেন না, দেখা গেল যে লালসাকে সামনে রেখে বড় কোনও সংগঠিত অপরাধ ছিল। বিজেপি নেতারা বলছেন, তথ্য-প্রমাণ লোপাট হয়ে দিয়েছে। আসলে বিজেপি নেতাদেরও কিছু করার নেই। পুলিস-সিবিআই-ইডি সব একাকার হয়ে গিয়েছে'।

    এদিকে আরজি কর সিবিআই তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতার পরিবার। তারপর সুপ্রিম কোর্টের যান তাঁরা। সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'হাইকোর্টে তো গিয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য প্রমাণ করুন। তাহলেই যথার্থ হবে। এবং সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের তার ভিত্তিতে যা দেওয়ার দেবেন'।

    আর তৃণমূল? কুণাল ঘোষ বলেন, 'যাঁরা অন্ধ তৃণমূল বিরোধী শক্তি, তাঁদের মুখপাত্র হয়ে, তাঁদের সাজিয়ে দেওয়া বিবৃতিগুলি বলছেন, এটা তো আপত্তি। তাঁরা তো তাঁদের শোক সাজাবেন। বলার বলবেন, কে বারণ করেছে! কিন্তু আজ একটা কথা বলবেন, কাল উল্টো বলবেন,  পরশু সেটা মিটে যাওয়ার পর নতুন ইস্যু তুলে আনার জন্য বিরোধীরা যা শিখিয়ে দিচ্ছেন, সেগুলি আবার বলে বসবেন। মানে কী'!

    কুণালের আরও বক্তব্য, 'কে গিয়েছিল, অভয়ার বাবা-মা বলুন, We Want CBI, We don't want Kolkata Police.কে গিয়েছিল হাইকোর্টে! আপনারা গিয়েছিলেন। সিবিআই তদন্ত করেছে। যাঁরা মদত দিচ্ছে, তাঁদের রাজনীতি পছন্দ হচ্ছে না। তখন শিখিয়ে দিচ্ছে, সিবিআইটাও মানি না। কী করে হতে পারে! আপনারা চান কি! কিছু অতৃপ্ত আত্মা আপনাদের আবেগকে বিপথে পরিচালিত করছে। আপনারা সেই ফাঁদে পা দিচ্ছেন। কত টাকা উঠেছে আপনার মেয়ের নামে, সে টাকা কোথায় গেল, প্রশ্ন জাগছে না। মৃত্যুর দিন থেকে রোজ দু'জনে সাংবাদিক বৈঠক করে যাচ্ছেন, রোজ বিবৃতি দিচ্ছেন, এই প্রশ্নটা আসছেন না কেন'।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)