নর্দমার জল থেকেই তৈরি হবে জৈব সার, খড়গপুর আইআইটির গবেষণায় সাফল্য
বর্তমান | ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
অর্ক দে, কলকাতা: নর্দমার জল থেকেই তৈরি করা যাবে জৈব সার! গাছ পাবে পুষ্টি। ফুল হোক কিংবা ফল, সব ধরনের গাছেই ব্যবহার করা যাবে। জমি হবে উর্বর। খড়গপুর আইআইটির গবেষণায় তেমনটাই উঠে এসেছে। কলকাতা পুরসভার তরফে নর্দমার জল শোধন করে তা কাজে লাগানো যায় কি না, সেই সমীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল খড়গপুর আইআইটিকে। সমীক্ষায় সফলতা এসেছে। আইআইটির গবেষক তথা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক শীর্ষেন্দু দে বলেন, নর্দমার নোংরা জল পরিশোধন করার পর যে স্লাজ বা থকথকে কর্দমাক্ত উপাদান পড়ে থাকে, সেটাকে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি, সেই জল অনায়াসে গাছগাছালি, রাস্তা, বিল্ডিং ধোয়ানোর কাজেও ব্যবহার করা যাবে। চলতি মাসের শেষেই ফাইনাল রিপোর্ট দেখাতে পুরসভায় আসছেন গবেষক।
শহরে নিয়মিত গাছে জল দেওয়া থেকে শুরু করে রাস্তা ধোয়ানো, শীতকালে বাতাসে জল স্প্রে করা সহ নানা কাজে পরিশ্রুত পানীয় জল ব্যবহার হয়। সেই জলের ব্যবহার কমাতে নতুন পরিকল্পনা নেয় পুরসভা। নর্দমার জল শোধন করে যদি সেই জল এসব কাজে লাগানো যায় তাহলে পানীয় জলের অপচয় বন্ধ হবে। সেই ভাবনা থেকেই খড়গপুর আইআইটিকে দায়িত্ব দেয় পুরসভার নিকাশি বিভাগ। বিষয়টি নিয়ে বিশেষ উদ্যোগী হন সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং। জানা গিয়েছে, পুরসভার থেকে প্রায় ১২০০ লিটার নর্দমার জল গবেষণার কাজে নিয়েছিল খড়গপুর। প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে সমীক্ষার পর রেজাল্ট সামনে এসেছে। শীর্ষেন্দুবাবু বলেন, নর্দমার জল শোধনের পর যে স্লাজ মেলে সেটি অর্গানিক উপাদানে ভরপুর। সেটাকেই সার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ১২০০ লিটার নর্দমার জল থেকে প্রায় ২৪ থেকে ২৫ লিটার এই স্লাজ বা জৈব সার পাওয়া যেতে পারে।
তিনি আরও জানান, এই পদ্ধতিতে নর্দমার জলে ব্যাকটেরিয়ার যে 'লোড' থাকে, তা সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়। প্রায় ৯৯.৯৯ শতাংশ ব্যাকটেরিয়া কমানো সম্ভব হয়েছে। সেই জল গাছে, রাস্তা ঘুমানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে। তবে, এই শোধনের পরেও সেই জল খাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ, তার মধ্যে নানা ধরনের ধাতব উপাদান থাকতে পারে। যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। তবু সেটাও করা যেতে পারে। তার জন্য একটা আরও করতে হবে। তারপর সেই জল পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে তা পানীয়ের যোগ্য কি না। চলতি মাসেই পুরসভায় গিয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলব। ওনারা যদি এটা বাস্তবায়ন করেন, তাহলে খুবই ভালো হয়। পুরসভার বিভিন্ন কাজে পরিশ্রুত জলের অপচয় বন্ধ হবে।