অলকাভ নিয়োগী, বিধাননগর: সাইবার প্রতারণার টাকা লেনদেন করার জন্য অসংখ্য প্রপাইটারশিপ এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলছে প্রতারকরা। মূলত, সাধারণ মানুষকে টাকার টোপ দিয়েই ওই অ্যাকাউন্ট খোলানো হচ্ছে। কিন্তু, তাঁরা জানতেও পারছেন না, তাঁদের নথি দিয়ে ব্যবহৃত অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে প্রতারণার টাকা। তাই কোনও পরিচিত ব্যক্তি এই টাকার বিনিময়ে এই ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার টোপ দিলেও কেউ যাতে সেই ফাঁদে পা না দেন, সে ব্যাপারে সতর্ক করছে বিধাননগর কমিশনারেট। পুলিসের দাবি, এই ধরনের প্রস্তাব পেলেই দ্রুত থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। যাতে প্রতারকরা ধরা পড়ে।
একটি ডিজিট্যাল অ্যারেস্ট মামলার তদন্তে নেমে অ্যাকাউন্ট বানানোর বড়সড় চক্রের হদিস পেয়েছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানা। তিনজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, এই চক্রটি কলকাতাতেই প্রায় ৫০০টি ওই ধরনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছিল। যেগুলি সবই কোনও না কোনও সাধারণ মানুষের নথি নিয়ে খোলা হয়েছিল। পুলিস জানিয়েছে, প্রতারকরা, সাধারণ মানুষকে ওই ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রস্তাব দিচ্ছে। টাকার অফারও করছে। সেই টাকার লোভে অনেকেই রাজি হয়ে যাচ্ছেন। এই প্রপাইটারশিপ অ্যাকাউন্ট এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্টগুলিতে বেশি টাকা লেনদেন করা যায়। এইগুলিকে হাই ভ্যালু ট্রানজাকশন অ্যাকাউন্টও বলা হয়। প্রতারকরা বিভিন্ন কোম্পানি ও সংস্থার নাম ব্যবহার করে ওই অ্যাকাউন্টগুলি খুলছে। তার জন্য তারা সংস্থার ভুয়ো প্যাডও ও নথিও তৈরি করছে।
পুলিস জানিয়েছে, ওই ধরনের অ্যাকাউটে সাইবার প্রতারণার কোটি কোটি টাকা লেনদন হয়েছে। প্রতারকরা ১.৫ থেকে ২ শতাংশ কমিশনে তারা অ্যাকাউন্টগুলি ভাড়া দিয়েছিল। কিছু অ্যাকাউন্ট চড়া দামে বিক্রিও করা হয়েছে। ফলে,সাধারণ মানুষকে টুপি পরিয়ে তাঁদের নথি ব্যবহার করেই কোটি কোটি টাকা লুট করেছে প্রতারকরা। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, সাইবার প্রতারণার তদন্ত হলেই অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া যাবে। তখন যাঁর নামে অ্যাকাউন্ট তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফলে, অপরাধ না করেও তাঁরা হয়রানি শিকার হতে পারেন। তাই টাকার লোভ দেখালেও ওই ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কাউকে নথি দিয়ে দেবেন না। তা না হলে নিজের অজান্তেই সাইবার প্রতারণার মামলায় যুক্ত হবেন আপনিও।